অন্যান্য দেশের শেয়ার বাজারের দাম পতন হলে একটা সময় পরে আবার বাজার ভালো হয়ে যায়। কিন্তু বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের পতন হলে কেন ঘুরে দাড়াতে পারছেনা না?
এই বিষয়টি নিয়ে বাজার সংশ্লিষ্ট কয়েক জন অভিজ্ঞ লোকের সাথে আমাদের ঢাকা শেয়ারবাজার ডট কমের সিনিয়র রিপোর্টার, গত এক মাস যাবৎ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে আমাদের সিনিয়র রিপোর্টার যে তথ্যগুলো পেয়েছেন তা তুলে ধরা হলো।
যে বিষয়টি বেশির ভাগ বিশ্লেষক জানিয়েছেন
মানহীন কোম্পানি শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হতে না পারে সে বিষয় কঠোর ভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। মানহীন কোম্পানি তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে ইস্যুয়ার কোম্পানি ওচার্টার ফার্মগুলোকেও আইনের আওতাধীন করা উচিৎ। মানহীন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হবার পিছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী ইস্যুয়ার কোম্পানি ও চার্টার ফার্ম।
ইস্যুয়ার কোম্পানি ও চার্টার ফার্ম মিলে একটি ২/৩ কোটি টাকার কোম্পানিকে ভুয়া রিপোর্টের মাধ্যমে পেইডআপ ক্যাপিটাল বড় করে বাজারে তালিকাভুক্ত হয়। তারা প্যাকেজ ঠিক করে আপনি এত শতাংশ পাবেন।
কোম্পানি মালিক চিন্তা করে আমার ৩ কোটি টাকার কোম্পানি যদি এত বেশি টাকাতে তালিকাভুক্ত করে দেয়, তাহলে আমার অনেক লাভ হবে। লোভে পরে অনৈতিক ভাবে আইপিওতে তালিকাভুক্ত হয়। আইপিওতে এসে ১/২ বছর নাম মাত্র লভ্যাংশ দিয়ে ২/৩ বছরের মধ্যে খারাপ কোম্পানিতে রুপান্তরিত হয়। কয়েক বছর আগে তো আইপিওতে এসেই বোনাস শেয়ার দিতে পারতো।
উল্লেখ্য, ২০১০ পরবর্তী সময় হতে ২০২০ সাল এই ১০ বছরে ১০০ এর অধিক মানহীন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়ে মূলত বাজারের মূল ভিত্তি নস্ট করে দিয়েছে। লিস্টিং কোম্পানি গুলোর ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টে অস্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব। যার ফলে প্রকৃত সত্য প্রকাশ হচ্ছেনা।
তাছাড়া ইনসাইডার নিউজ প্রকাশ পাওয়া। সিডিবিএল এর তথ্য জুয়াড়িদের কাছে যাওয়া। জুয়াড়িদের সাথে কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সখ্যতা মূলত এই ৩ টি ইস্যুতে বাজারের একটি নির্দিষ্টচক্র লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।
যে কারণে বাজারে চরম আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে, বাজারে আস্থা না থাকার কারণে বাজার বিমূখ দেশের বড় বড় বিনিয়োগকারীরা।
বেশির ভাগ বিশ্লেষক মত দিয়েছেন বাজারে নতুন কোম্পানি আনতে হবে, এই ইস্যুতে আজেবাজে নামসর্বস্ব কোম্পানি আর যাতে তালিকাভুক্ত হতে না পারে, সে ব্যাপারে কঠোর ভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। নামসর্বস্ব কোম্পানি তালিকাভুক্ত করার চেয়ে, না করাই উত্তম বলে মনে করেন কেউ কেউ।
উপরোক্ত সমস্যাগুলি সমধান হলেই বাজারের ভিত্তি শক্ত হতো।আর বাজারের ভিত্তি মজবুত হলে শেয়ার বাজার তার স্বাভাবিক গতিতে চলবে। আসলে শেয়ার বাজার এমন একটা ক্ষেত্র যেখানে মানুষ কে ডেকে আনা যায় না। বাজারের প্রবাহ থাকলে বাজারে মানুষ অটোমেটিক ছুটে আসবে।
বাজার ভালো করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিতে হবে, কিভাবে বাংলাদেশে ব্যবসা করা দেশীয় ও বহুজাতিক ভালো ব্রান্ডেড কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত করা যায়, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। বাজারে যদি ১৫/২০ টি দেশীয় ও বহুজাতিক ভালো ব্রান্ডেড কোম্পানি তালিকাভুক্ত করা যায় তাহলে বাজারের প্রতি চাহিদা ফিরে আসবে মানুষের। বাজারে ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে বাজারের ভিত্তি শক্ত হবে।
Author
-
'ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম' একটি নির্ভরযোগ্য শেয়ার বাজার ভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল। অর্থ ও বাণিজ্য, রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি, প্রতিবেদন, বিশ্লেষণমূলক লেখা প্রকাশ করে।
View all posts
'ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম' শেয়ার মার্কেটের প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সততার সহিত পরিবেশন করে এবং কোন সময় অতিরঞ্জিত, ভুল তথ্য প্রকাশ করেনা এবং গুজব ছড়ায়না, বরং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে বদ্ধ পরিকর। এটি একটি স্বাধীন, নির্দলীয় এবং অলাভজনক প্রকাশনা মাধ্যম।