ঢাকা শেয়ার বাজার

৮ নভেম্বর ২০২৫ শনিবার ২৩ কার্তিক ১৪৩২

একজন শ্যামল বর ত্রিমূর্তি! অর্থোডন্টিস্ট চিকিৎসক, কবি ও চিত্রশিল্পী

সবার আগে শেয়ার বাজারের নির্ভর যোগ্য খবর পেতে আপনার ফেসবুক থেকে  “ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম” ফেসবুক পেজে লাইক করে রাখুন, সবার আগে আপনার ওয়ালে দেখতে। লাইক করতে লিংকে ক্লিক করুন  facebook.com/dhakasharebazar2024

অধ্যাপক ডাঃ শ্যামল বর এমন একজন অভিজ্ঞ অর্থোডন্টিস্ট চিকিৎসক, যিনি নির্ভরতার এক অনন্য স্তম্ভ। টলিউড বুম্বাদা খ্যাত লিভিং লিজেন্ড প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জিসহ কলকাতার অনেক নামিদামি সেলিব্রিটির কাছে অন্যতম ভরসার প্রতীক অধ্যাপক ডাঃ শ্যামল বর। ডাঃ বর প্রচুর কর্মব্যস্ততার মাঝেও প্রান্তিক ও সাধারণ মানুষের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখেন, যা বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য ও প্রশংসার তুমুল দাবিদার।

প্রথমেই বলি তিনি একজন সরকারি অধ্যাপক তাই তার সবকিছু পাবলিক করার আগে তাঁকে সরকারকে জানাতে হয়। তবে এইটুকু কোনো অনুষ্ঠনিকতা ছাড়া না লিখে পারছি না (নানান সীমাবদ্ধতায়)। তাই এই লেখাটার সমস্ত দায়ভার একান্ত আমার নিজের, আমার ভীষণ কৃতজ্ঞতা, সম্মান, ভালোবাসা ও ভালোলাগার দায়ভারে।

একজন কবি, একজন চিত্রশিল্পী ও একজন চিকিৎসক, একজন মানবিক মানুষ বহু গুণে গুণান্বিত একজনই ব্যক্তি। আমার সাথে প্রথম পরিচয় একজন অর্থ ডেন্টিস্ট চিকিৎসক হিসেবে। বলছিলাম কলকাতার বুকে নীরবে ফুটে থাকা ফুল, যে কিনা আলোয় আলোয় চারিপাশ উজ্জ্বল করে থাকা এক প্রাণ- তিনি অধ্যাপক ডা: শ্যামল বর। ডাক্তার শ্যামল বরের সাথে দীর্ঘ দিন না মিশলে তার ভেতরগত আলো ও সৌন্দর্য জানা বেশ মুশকিল। তিনি কিছুটা নীরবে নিভৃতে কাজ করা এজন উদার হৃদয়ের মানুষ, মানুষ বলছি মহান মানুষ। ডা: শ্যামল বর চমৎকার ছবিও আঁকেন, তিনি একজন চিত্রশিল্পীও।

কবি শ্যামল বর

তার কবিতা পাঠক মনে শান্তির চাঁদর বিছিয়ে দেয়, এছাড়াও তার কবিতায় আছে এক নীরব বিপ্লবও, তার কবিতা যেন শান্ত জলের মতো প্রতিবাদ জানিয়ে যায়, সমাজের সকল অপব্যয়িতের। ডাক্তার বরের মাঝে থাকা কবি সত্তা থেকে বেড়িয়ে আসা কবিতায় আমি ব্যক্তিগত ভাবে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথকে খুঁজে পাই। অনেক সুন্দর কবিতার মাঝে, বেশ কিছু কবিতা পাই এই ধরুন কবিগুরুর, ‘আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে, নইলে মোরা রাজার সনে মিলবো কি শর্তে’ ডাক্তার বরের কবিতায় আমি এমন তুমুল প্রতিবাদ দেখেছি শান্ত হীমশীতের জলের মতো। তাঁর কবিতার শব্দ চয়ন যেন পুষ্পগাথা, আমাকে পুলকিত করে।

২/৪ বার আমিও চেয়েছি ঠিক এভাবে লিখতে। কিন্তু পারিনি কারণ আমি যে পোড় খাওয়া এই অস্থির সময়ের দাহকালীন নির্বাক কবি। সবাই সব কিছু পারেনা, আমার কখনো কখনো আফসোস হয়। আবার যখন ডা: শ্যামল বরের সামনে বসি মনোযোগ দিয়ে কাজের কথা ও কিছুটা খোস গল্প করি, আমি অনুভব করি শান্ত হৃদয়ে শান্ত শীতল জলের ছোঁয়া, অনুভব করি যেথায় জল আমাদের জীবন।

হোয়াটসঅ্যাপে আমার জন্য বিশেষ দিনে পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তা, ডাঃ বরের সৃষ্টি। যা ধন্য করেছে মোরে, ভীষণ হই প্রীত।

ডা: বর কোথাও কোনো কবিতা পাবলিক করেন না, কারণটা প্রথমেই বলেছি কিছুটা। ডাক্তার বরকে প্রশ্ন করেছিলাম, আপনি কতগুলো কবিতা লিখেছেন? কিছুই বললেন না। কিছুটা শব্দহীন হয়ে হাসলেন। আমি হাসার কারণটা বুঝলাম, তিনি নিজের জন্য কবিতা লেখেন, ভালোবাসা ও ভাললাগা থেকে লেখেন। ভীষণ রকম নীরবে নিভৃতে একান্তই নিজে নিজে জন্য লেখেন, সময়ের জন্য লেখেন। সংখ্যা ভাবেন না কিংবা কোন কাব্যগ্রন্থের প্রকাশের কথাও ভাবেন না। শ্যামল বরের মতো সৃষ্টিশীল মানুষরা হয়ত এমনি হয়।

চিত্রশিল্পী শ্যামল বর:

চিত্রশিল্পীদের ছবির ভাষা বেশ দুর্বোদ্ধ হয়, অনেকেই কিছুই বুঝতে পারে না। আমি কিছুটা বোঝার চেষ্টা করি এবং পারি। ডা: বরের ২৬ টা চিত্রশিল্প ভালোভাবে বুঝতে আমার বেশ সময় লেগেছে। কবিতা আমি কিছুটা ভালোই বুঝলেও, চিত্রকর্ম বুঝতে আমার কিছুটা সময় লাগে। তার আঁকা চিত্রে আমি দেখেছি বিভাজন, মাতৃস্নেহ, দাঙ্গা, মায়া মমতা, মুখের অভিব্যক্তি, মুখোমুখি তির্যক সম্পর্ক, অসহায় মমতা, সময়ের সাথে মানব গতির পাল্লা, বাংলাদেশের জাতীয় মাছ, গ্রামীণ সবুজ মায়া।

ডাঃ শ্যামল বরের সৃষ্টি চিত্রশিল্প।

যদিও কখনো কখনো শিল্পীর চিন্তা বুঝতে না পারাটাও খুবই স্বাভাবিক। চিত্রশিল্পের মূল লক্ষ্য হল একটি দৃশ্য বা ধারণাকে দৃশ্যমান করে তুলে ধরা। শিল্পী কখন তাঁর কোন কল্পনা, আবেগ এবং অনুভূতি প্রকাশ করেছেন, কখনো কখনো অনেকের জন্যই বুঝতে পারাটা দুরূহ। চিত্রশিল্পের মাধ্যমে, আমরা বেশির ভাগ সময় আমারা আমাদের মতো চারপাশের জগৎ, মানুষ, প্রাণী, বস্তু, এবং প্রকৃতির বিভিন্ন দিক দেখতে পাই। যেমন আমি আমার মতো করে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি ডা: বরের চিত্রগুলো বা আমি আমার মতো করে দেখি তাঁর এই শিল্পকর্মকে।

ডাঃ অধ্যাপক শ্যামল বর

আমার প্রথম যেদিন তাঁর সাথে দেখা করতে যাই স্মাইল ডিজাইনার নামের তাঁর ব্যক্তিগত চেম্বারে, সেদিন আমি আমার বন্ধু লিটন রাকিবের বাড়ি থেকে ৭০ কিলোমিটার বঙ্গ লোকাল ট্রেনে চড়ে এর পর কারে করে দীর্ঘ একটা জার্নি করে আসি। এটা ৩ ঘণ্টার জার্নি হলে, এটা আমার আপনি ২৫ বছরের জার্নিও বলতে পারেন। তখন আমি ছিলাম মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত ও ক্লান্ত। আমি কোন প্রকার সিরিয়াল ছাড়াই এসেছিলাম, মিউচুয়াল ফ্রেন্ড ডাঃ স্নেহ্যশীষের মাধ্যমে। সিরিয়াল না থাকায় ডাক্তার চেম্বারের সামনে আমাকে প্রায় দুই ঘণ্টা বসে থাকতে হয়।

অবশেষে আমি ডাক্তারের সামনে বসার সুযোগ পেলাম, আমার বলার আছে অনেক কিছু, আমি সব বলার জন্য মুখিয়ে আছি। তিনি  আমাকে দেখে বললেন আপনি বসুন, রেস্ট নিন। এরই মধ্যে তিনি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন আর কাগজে কিছু একটা আঁকছেন- আমি দেখালাম আমার মুখমণ্ডল। এরপর বললেন…

আমার যেমন ভালো লাগছে, তেমনি দীর্ঘ একটা চিকিৎসা জার্নির কথা শুনেও হতাশও। কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারলাম না। ভয়াবহ হতাশায় ভাবছি ঢাকা ফিরে যাবো। এবার আর সাউথ ২৪ পরগনা বন্ধুর বাড়ি ফিরে যাবোনা। ক্লান্ত দেহমন হোটেলের বিছানায় শুইয়ে দিলাম। মন অস্থির হতে শুরু করলো, ২ বছরে ঢাকা-কলকাতা, অগণিত টাকা, কষ্ট, সময়, অপারেশনের লাইফ রিস্ক সব মিলিয়ে ভয়াবহ মানসিক বিপর্যয়। সান্তনায় ভালোবাসায় কাছে ছিলেন ডাঃ সেনাহাশিস, কবি, গবেষক ও শিক্ষক লিটন রাকিব, রফিক ভাই, ইমাম দাদা, জসিম ভাই, রুনু আপা, তানিয়া আপা ও প্রিয়তমা মহামায়া আমার।

অবশেষে পরদিন বিকেলে সিদ্ধান্ত চিকিৎসার এই লম্বা জার্নিতে দৌড়াতে চাই, থামবো না। পাশেই আছেন পরিবারের সবাই সহ আমার বিপদের সময়ের বন্ধুরা। বসন্ত পাখিরা নয়, বন্ধু আমার আত্মার আত্মীয় যারা। চলতে থাকে আমার পথচলা দীর্ঘ চিকিৎসা মাঝপথে একাধিক সার্জারি। সর্বশেষ অপারেশন আজ এক মাসের বেশি হল, এখন আমি একটা সফল চিকিৎসার শেষ দিকে। এই যাত্রায় সবার সাথে আরও একটা বড় নাম আছে ডাঃ সুজয় মুখার্জি, ওরাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জান।

অধ্যাপক ডাঃ শ্যামল বার হেড অফ ডিপার্টমেন্ট, অর্থোডন্টিস্ট ডিপার্টমেন্ট বর্ধমান ডেন্টাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল। তিনি ব্যক্তিগত চেম্বার স্মাইল ডিজাইনারসহ, সিএমআরআই হসপিটাল, কোঠারী মেডিকেল সেন্টার ও অরবিন্দ্র সেবা কেন্দ্রে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন।

ডাঃ শ্যামল বার রোগীদের জন্য চমৎকার, প্রমাণ-ভিত্তিক, সহানুভূতিশীল সেবা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি রোগীদের সাথে বাংলা, হিন্দি, ইংরেজিতে খোলামেলা যোগাযোগকেও উৎসাহিত করেন, যা তাদের নিজস্ব সুস্থতার জন্য সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের পথ দেখাতে সাহায্য করে। ডাঃ শ্যামল বার পশ্চিমবঙ্গে যথেষ্ট সময় ধরে সাফল্যের সাথে অর্থোডন্টিস্ট হিসেবে কাজ করে চলেছেন।

ব্যক্তি শ্যামল বর

কবি শ্যামল বর, চিত্রশিল্পী শ্যামল বর, ডাঃ অধ্যাপক শ্যামল বর নিয়ে অল্প কিছু কথা বলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু এমন মহান ও বর্ণাঢ্য মানুষের জীবন নিয়ে লেখা আমার মতো সাধারণের কাজ নয়। তাও ভীষণ ভালোলাগা ও ভালোবাসার পাশাপাশি ভীষণ প্রীত হয়ে কিছু বলে যাবার চেষ্টা করলাম মাত্র। এবার ব্যক্তি শ্যামল বরকে নিয়ে দু-চারটা কথা বলি, বলাটা হয়ত বেশ ওগোছালো ও কম হয়ে যাবে। তাও বলতে না পারার ব্যর্থতাই নিয়ে একটু বলেই যাই। শ্যামল বর একজন জল-মাটির গন্ধমাখা মাটির মানুষ। তাঁর অতীত তাঁর জীবন তিনি অকপটে বলতে পারেন। যা শুধু এদের মতো উদার মনের মানুষরাই বলতে পারেন। তিনি আমাকে অনেকে সাবলীল ভাবে বলেছেন ‘ফরিদপুর, পদ্মাপার ও বাংলাদেশের কথা’। বলেছেন ১৯৪৭ সাল দেশভাগ, ১৯৬৪ সাল ছত্তিশগড় রাজ্যের রাজধানী রায়পুর ও তাঁর বাবা-মা…।

যাই হোক শ্যামল বরের মতো এমন মানুষ যারা জন্ম দিয়েছেন, তাঁদের সেই মহান মানুষদের জন্য বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই, তারা যেখানেই থাকুন না কেন, তাদের জন্য শান্তি কামনা করি। ব্যক্তি শ্যামল বর একজন শান্তি প্রিয় মানুষ, তিনি মানবিক, প্রগতিশীল, বিচক্ষণ ও দয়ালু মানুষ। তাঁর এই গুণগুলো তাঁকে উত্তম ও মহান চরিত্রের বহমান রেখেছে।

আমি একজন কবি শ্যামল বর, চিত্রশিল্পী শ্যামল বর ও ডাঃ অধ্যাপক শ্যামল বরের স্বস্তির জীবন ও নিয়মিত সাফল্য কামনা করি যা তাঁর প্রাপ্য এই মহালয়ে। সর্বশেষে বলি- আপনার, ডাঃ সুজয় মুখার্জি ও আপনাদের টিমের সেবা, মানবিকতা, দায়িত্ববোধ, প্রফেশনালিজম, ভালোবাসা, রোগীর প্রতি যত্ন, অর্থনৈতিক খেয়াল ও রোগীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ধন্য করেছে মোরে। চির কৃতজ্ঞতা ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানাই আপনাদের। এভাবেই সেবায় ব্রত থাকুন যতদিন চায় আপনাদের মস্তিষ্ক ও মনোমন্দির। সাথে চলুক অনবরত আপনার আমার জানামতে অনন্য দুই সত্তা সাহিত্য ও চিত্রশিল্প চর্চা।

Author

  • টি এম মিলজার হোসেন একজন বাংলা ভাষার কবি। তিনি সর্বদা ব্যতিক্রম কবিতা লিখে থাকেন, তিনি স্রোতের বিপরীতে হাঁটা মানুষ। তার কবিতার প্রধান বিষয়বস্তু দেশ, মানুষ, মনুষ্য প্রাণী, প্রকৃতি, মানব আদর্শ, হতাশা, দাহকাল, নরক ভূমি, সমসাময়িক অস্থির সময়, মনুষ্যত্ব বোধ, অধর্ম, হিংসা ও হিংস্রতা। তার কর্মজীবন মূলত পুঁজিবাজার নিয়ে। পুঁজিবাজার তার পেশা হলেও তার অপরিসীম ভালবাসা সাহিত্যে। তিনি নরওয়ে থেকে প্রকাশিত বাংলা পত্রিকা ‘সাময়িকী’র সাবেক মাল্টিমিডিয়া সম্পাদক। বর্তমানে  ‘ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম’ এর নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

    View all posts
Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আপনি এটাও পড়তে পারেন
শেয়ার বাজার

আপনি এই পৃষ্ঠার কন্টেন্ট কপি করতে পারবেন না।