ঢাকা শেয়ার বাজার

১৯ জানুয়ারি ২০২৫ রবিবার ৫ মাঘ ১৪৩১

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ

সবার আগে শেয়ার বাজারের নির্ভর যোগ্য খবর পেতে আপনার ফেসবুক থেকে  “ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম” ফেসবুক পেজে লাইক করে রাখুন, সবার আগে আপনার ওয়ালে দেখতে। লাইক করতে লিংকে ক্লিক করুন  facebook.com/dhakasharebazar2024

আজ ১৭ই এপ্রিল, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য দিন। একাত্তরের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও সরকার পরিচালনা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে হলেও ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ নির্যাতিত মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য অর্জনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কার্যকর অবদান রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে সরকারিভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও দিনব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছে। এ দিন মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলায় সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ঢাকা ও মুজিবনগরে এ দিবস উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ভবনে আলোকসজ্জা এবং সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামের আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। পরে এই বৈদ্যনাথতলাকেই ঐতিহাসিক মুজিবনগর নামকরণ করা হয়।

একই বছরের ১০ই এপ্রিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়। মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্বে ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একাত্তরের ১৬ই ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। এ দিন গণপ্রজাতন্ত্ররূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠার ঘোষণাপত্রে ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়।

সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি ও সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া তাজউদ্দীন আহমদ অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী, খন্দকার মোশতাক আহমেদ পররাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী এবং এএইচএম কামরুজ্জামান স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী নিযুক্ত হন।

জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী অস্থায়ী সরকারের মুক্তিবাহিনীর প্রধান কমান্ডার এবং মেজর জেনারেল আবদুর রব চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। মুজিবনগর সরকারের শপথের দিন ১২ জন আনসার সদস্য ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। পর দিন ১১ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ দেশবাসীর উদ্দেশে বেতারে ভাষণ দেন। তার এই ভাষণ আকাশবাণী থেকে একাধিকবার প্রচার হয়।

ওই ভাষণে দেশব্যাপী পরিচালিত প্রতিরোধ যুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন তাজউদ্দীন। এছাড়া ১৭ই এপ্রিল মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত হয়। তাজউদ্দীনের ভাষণের মধ্য দিয়েই দেশ-বিদেশের মানুষ জানতে পারেন বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম পরিচালনার লক্ষ্যে একটি আইনানুগ সরকার গঠিত হয়েছে। এরই পথপরিক্রমায় ১৭ই এপ্রিল সকালে মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর তৎকালীন পাকিস্তানের শাসকচক্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং বেআইনিভাবে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।

পরে একাত্তরের ২৫ শে মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ন্যায়-নীতি বর্হিভূত এবং বিশ্বাস ঘাতকতামূলক যুদ্ধ শুরু করলে ২৬ শে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়ারলেসে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

তারই ধারাবাহিকতায় ১০ই এপ্রিল মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকার মুক্তাঞ্চলে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এক বিশেষ অধিবেশনে মিলিত হন এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করেন।

১৭ ই এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ায় দুই ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান বিমানবাহিনী বোমাবর্ষণ ও আক্রমণ চালিয়ে মেহেরপুর দখল করে। ফলে, অস্থায়ী সরকার ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয় এবং সেখান থেকে কার্যক্রম চালাতে থাকে। ১৮ এপ্রিল মন্ত্রী পরিষদের প্রথম সভায় মন্ত্রীদের দফতর বন্টন করা হয়। মুজিব নগর সরকারের সফল নেতৃত্বে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভ করে।

মুজিবনগর দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের জন্য সোমবার সকাল ৯টায় মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কেন্দ্রে জাতীয় পতাকা তোলার মধ্য দিয়ে দিবসটির সূচনা হবে। এরপর মুজিবনগরের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কেন্দ্রে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। আম্রকাননে বীর মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি, বিএনসিসি, স্কাউটস, গার্লস গাইড এবং স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা গার্ড অব অনার দেবে। পাশাপাশি বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজও অনুষ্ঠিত হবে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সকাল ১০টায় মুজিবনগরের গীতিনাট্য ‘জল, মাটি ও মানুষ’ প্রদর্শিত হবে। পৌনে ১১টায় মুজিবনগরের শেখ হাসিনা মঞ্চে এ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা হবে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা ও মোনাজাত বা প্রার্থনা করা হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে কর্মসূচি পালন করা হবে।

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে এক দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ।

Author

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আপনি এটাও পড়তে পারেন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

শেয়ার বাজার

আপনি এই পৃষ্ঠার কন্টেন্ট কপি করতে পারবেন না।