ওয়ারেন এডওয়ার্ড বাফেট (জন্ম: ৩০ আগস্ট ১৯৩০) একজন মার্কিন ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী এবং জনহিতৈষী ব্যক্তি। তাকে বিংশ শতকের সবচেয়ে সফল শেয়ার বাজারের বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাফেট বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে কোম্পানির প্রধান নির্বাহী।
তিনি ধারাবাহিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন। ২০১১ সালে বাফেট বিশ্বের তৃতীয় ধনী ব্যক্তি ছিলেন। ২০১২ সালে টাইম ম্যাগাজিন তাকে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি ঘোষণা করে। বিপুল ধনসম্পদের মালিক হওয়া সত্ত্বেও ওয়ারেন বাফেট অত্যন্ত মিতব্যয়ী। বাফেট একজন প্রখ্যাত জনহিতৈষী ব্যক্তি। তিনি তার সম্পদের ৯৯ ভাগ জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য দান করবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন।
সিএনএন সূত্রে জাণা গেছে বিশ্বের অন্যতম সম্পদশালী ব্যক্তি ওয়ারেন বাফেটের মৃত্যুর পর তার সম্পদ কীভাবে ব্যবহৃত হবে সম্প্রতি জানালেন বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের ৯৩ বছর বয়সী এ চেয়ারম্যান।
গত সপ্তাহের এক হিসাব অনুসারে, ওয়ারেন বাফেটের নিট সম্পদের পরিমাণ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে এ ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, আবারো উইল পরিবর্তন করেছেন।
এ হিসেবে বাফেটের মৃত্যুর পর বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনে অনুদান বন্ধ হয়ে যাবে। এর বদলে তিন সন্তানের তত্ত্বাবধানে একটি নতুন দাতব্য সংস্থায় সম্পদ রাখবেন ওয়ারেন বাফেট।
এ ধনকুবের আরো জানান, সন্তানদের মূল্যবোধের প্রতি আস্থা আছে তার। এ কারণে কীভাবে তারা সম্পদ দাতব্য কাজে ব্যবহার করবেন তা নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করেছেন।
ওয়ারেন বাফেটের সন্তানদের নিজস্ব দাতব্য সংস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার তিন সন্তানের মূল্যবোধ সম্পর্কে আমার ধারণা খুব ভালো। তারা কীভাবে আমার সম্পদ ব্যবহার করবে তাতে শতভাগ বিশ্বাস রয়েছে।’
এর আগের উইল অনুসারে, ওয়ারেন বাফেটের সম্পত্তির ৯৯ শতাংশেরও বেশি বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং তার পরিবারের সঙ্গে যুক্ত চারটি দাতব্য সংস্থার জন্য নির্ধারিত ছিল। সংস্থাটি চারটি হলো সুসান থম্পসন বাফেট ফাউন্ডেশন, শেরউড ফাউন্ডেশন, হাওয়ার্ড জি বাফেট ফাউন্ডেশন ও নভো ফাউন্ডেশন।
ওয়ারেন বাফেটের মন্তব্য অনুসারে, তার জীবদ্দশায় গেটস ফাউন্ডেশনে অনুদান চালিয়ে যাবেন।
বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে গতকাল জানিয়েছে, ওয়ারেন বাফেট প্রায় ৯ হাজার ক্লাস এ শেয়ারকে ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি ক্লাস বি শেয়ারে রূপান্তর করছেন। এর মধ্যে প্রায় ৯৩ লাখ শেয়ার বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন ট্রাস্টে যাবে, বাকি শেয়ার বাফেট পরিবারের চারটি দাতব্য সংস্থার মধ্যে বিতরণ হবে।
গেটস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মার্ক সুজম্যান এক বিবৃতিতে জানান, গেটস ফাউন্ডেশনে অনুদান ও পরামর্শ দিয়ে ১৮ বছরের বেশি সময় ধরে অবদান রাখছেন ওয়ারেন বাফেট। এ সংস্থায় তিনি ৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলার অনুদান দিয়েছেন।
এছাড়া গত বছর পরিবারিক চারটি দাতব্য সংস্থাকে প্রায় ৮৭ কোটি ডলার ও ২০২২ সালে প্রায় ৭৫ কোটি ডলার দান করেছিলেন।
ওয়ারেন বাফেটের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ বিষয়ে কিছু গুরুত্তপূর্ণ উক্তিঃ
কখনোই সব ডিম এক ঝুড়িতে রাখবেন না ৷ অর্থাৎ, একটি মাত্র ক্ষেত্রে বিনিয়োগ না করে ভিন্ন ভিন্ন অনেকগুলো খাতে ইনভেষ্ট করুন,যাতে মূলধন হারানোর ঝুঁকি কম থাকে।
আপনার পা পানিতে ডুবিয়ে কখনোই নদীর গভীরতা মাপবেন না৷
কখনোই আয়ের একমাত্র উৎসের উপর নির্ভর করবেন না। বিনিয়োগের মাধ্যমে আরেকটি উৎস তৈরী করুন।
খরচের পর যা অবশিষ্ট থাকে তা সঞ্চয় না করে বরং সঞ্চয়ের পর যা অবশিষ্ট থাকে তা খরচ করুন
এমন কোন ব্যবসায় বিনিয়োগ করিয়েন না, যা আপনি বোঝেন না।
ঝুকি তখনই থাকে যখন আপনি যা করছেন তা সম্পর্কে জানেন না
সততা, বুদ্ধিমত্তা এবং শক্তি সন্ধান করুন।