শেয়ার বাজার সারা বিশ্বে একটা অভিজ্ঞ ও স্মার্ট মানুষের ব্যবসা। শেয়ার বাজারে ব্যাবসা করতে হলে প্রতিদিন আপনাকে শেয়ার বাজার ও শেয়ার বাজারে থাকা কোম্পানি গুলো নিয়ে আপনাকে পড়াশুনা করতে হবে। মোট কথা শেয়ার বাজার সংশ্লিষ্ট সব কিছুর সাথে হালনাগাদ থাকতে হবে।
শেয়ার বাজারের মার্জিন লোণ নিয়ে আজ কিছু আলোচনা করা যাক। শেয়ার বাজারের মার্জিন নিয়ে আলাপ করলে প্রথমেই বলতে হবে, “শেয়ার বাজারে মার্জিন লোণ সবার জন্য নয়”। খুব অভিজ্ঞ না হলে মার্জিন লোণকে না বলুন। মনে রাখবেন আপনি যখন শেয়ার বাজারের একজন খুব অভিজ্ঞ ও স্মার্ট বিনিয়োগকারী না, তখন মার্জিন লোণ আপনার জন্য একটি মরণফাঁদ। যে ফাঁদে একবার পরলে বের হওয়া যায় না।আসলে আমাদের বাজারে টিকে থাকতে হলে নিজের পুঁজির নিরাপত্তা নিজেকেই দিতে হবে। লোন না নিয়ে যতটুকু পুঁজি আছে ততটুকুই সুপরিকল্পনা করে আগান।আসলে লোন নিয়া ব্যবসা করার অবস্থা আমাদের বাজারে নেই। যদি হত তাহলে আপনাকে লোন না দিয়ে ইন্সটিটিউট গুলি নিজেরাই ব্যবসা করত। আমজনতাকে ১৫-১৮% সুদে লোণ দিতোনা।
তাহলে ভাবুন প্রতিষ্ঠানিক ইন্সটিটিউটের চাইতেও কি আপনি বা আমি অতি স্মার্ট? তাদের কাছ থেকে লোন নিয়া ব্যবসা করি আমরা।
বলাই যায় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ব্যাক্তি পর্যায় লোণ নিয়ে শেয়ার বাজারে সফল হওয়া প্রায় অসম্ভব। উল্লেখ্য ২০১০ পরবর্তী, ২০১১ সালে বেশির ভাগ মানুষেই প্রায় সব টাকা শেষ হয়েছিল শুধু লোনের কারণে।
এই লোনের কারনেই ২০১৯ এর শেষ দিকে ও ২০২০ এর শুরুর দিকে ফোর্স সেলের কবলে পরে অনেক কোম্পানির শেয়ার। অসংখ্য বিনিয়োগকারী সব টাকা শেষ হয়ে গিয়েছিল তখন। শেয়ার বাজারের এই সব শেয়ারের ফোর্স সেলের বিক্রি চাপে তখন পুরো বাজার তছনছ হয়ে গিয়েছিল। এই সব ফোর্স সেলের ফলে লোণ গ্রাহকরা পথে বসে যাচ্ছে শুধু তাই না, এর প্রভাব পুরো বাজারে ধস আরো নামে।
কিন্তু লোন দেয়ার নিয়ম কানুন থাকলেও সেগুলি ফলোআপ করা হচ্ছেনা বললেই চলে। এসব আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি জানার পরও প্রায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে যথাযথ কর্তৃপক্ষগন। নীতিনির্ধারক পর্যায়ের লোকজন যদি একটু আন্তরিক ও কঠিন ভাবে কাজ করে, তাহলে সাধারণ মানুষ এতো ক্ষতিগ্রস্ত হবেনা বলে আশা করা যায়।
বিনিয়োগকারীদের জন্য পরামর্শ হলো, খুব অভিজ্ঞ না হলে, কেউ মার্জিন লোণ নিয়া ব্যবসা করবেন না। বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে লোণ নিয়ে ব্যবসা করার মতো অবস্থা আসলেই নেই। যারা কম বুঝেন এবং অল্প টাকা নিয়া ব্যবসা করেন, তাদের মার্চেন্ট ব্যাংকের হাউজে কোড থাকলেও সব সময়ই লোণ এড়িয়ে চলুন। অবশ্য মার্চেন্ট ব্যাংকে কোড থাকলেই সবার দেখাদেখি আপনারও লোন নিতে ইচ্ছা করবে। আর একটা সময় আপনি চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবেন। এমন অনেক জনকে দেউলিয়া হতে দেখা গেছে ইতিপূর্বে।
সর্বশেষে বলবো মার্জিন লোণ তো নিবেন না, এমন কি আত্মিয় স্বজনদের কাছ থেকেও টাকা ধার নিয়েও শেয়ার ব্যবসা করবেন না।
এমন টাকা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করবেন, যে টাকা আগামি দুই বছরে আপনার দরকার হবেনা। মূলকথা কখনোই অলস ফান্ড ছাড়া শেয়ার ব্যবসাতে বিনিয়োগ করা ঠিক নয়।
বাংলাদেশের শেয়ার বাজার লোণের জন্যে হোঁচট খায় বার বার, বিশেষ করে যখন বাজার নেতিবাচক থাকে। তাই আমাদের যার যার অবস্থান থেকে লোণকে না বলা উত্তম।
মনে রাখবে শেয়ার বাজার ধসের সময় কোন মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকার হাউস আপনাকে লোণ দিবে না। তাহলে ভাবুন কেন?!
শেয়ার বাজার ধসের সময় কেন তারা লোণ দেয়না! [ এ নিয়ে লেখা পড়ুন শেষ পর্বে ]
3 Responses
মার্জিন লোন দেয়ার নিয়ম কানুন সঠিকভাবে করা হয় কিনা এটা তদারকির মধ্যে রাখা উচিৎ
Margin lending institutions should be kept a close eye so that they do not lend at excessive rates through irregularities.