ঢাকা শেয়ার বাজার

৭ অক্টোবর ২০২৪ সোমবার ২২ আশ্বিন ১৪৩১

ফ্লোরে প্রাইজে আটকা পরা বিনিয়োগকারী উমরাহ হজ্জে যেতে না পারার আক্ষেপ

সবার আগে শেয়ার বাজারের নির্ভর যোগ্য খবর পেতে আপনার ফেসবুক থেকে  “ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম” ফেসবুক পেজে লাইক করে রাখুন, সবার আগে আপনার ওয়ালে দেখতে। লাইক করতে লিংকে ক্লিক করুন  facebook.com/dhakasharebazar2024

সারা পৃথিবীজুড়ে যত বিনিয়োগ ক্ষেত্র আছে, এর মধ্যে শেয়ার বাজার হয়েছে সবচেয়ে সহজ বিনিয়োগ ক্ষেত্র। যে ক্ষেত্র থেকে বিশেষ প্রয়োজনের সময় দ্রত টাকা নগদায়ন করা যায়। শেয়ারবাজার এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে শেয়ার বিক্রয়ের উপযোগী থাকলেই বিক্রি করা যায়।

কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্লোর প্রাইজের কারণে ইচ্ছা করলেই শেয়ার বিক্রি করা যাচ্ছেনা। যার ফলে বাজার নিয়ে এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে শেয়ার বাজার নিয়ে নেতিবাচক ধারণা জন্ম নিচ্ছে এবং শেয়ার বাজার নিয়ে ভুল ধারণা করছেন।

প্রয়োজনে শেয়ার বিক্রি করতে না পেরে শেয়ার বাজারের প্রতি কিছু মানুষের আস্থা উঠে যাচ্ছে। অনেকেই শেয়ার বিক্রি করতে গিয়ে যখন বিক্রি করতে পারছেন না, তখন পরিচিত হচ্ছেন ফ্লোর প্রাইজের অসুবিধার সাথে।

বাজারে বিভিন্ন রকমের বিনিয়োগকারী থাকেন। কেউ দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করেন কেউ বা ১/২ বছরের জন্য করেন আবার কেউ কেউ ডে ট্রেডিং করে থাকেন। আবার কেউ বা সিজনাল / মৌসুমি ব্যবসায়ীর মতন, একটি অল্প সময় এর জন্যে আসেন আবার চলে যান। উদাহরণ ব্যাংকের লভ্যাংশ নিতে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারীতে বিনিয়োগ করেন ২/৩ মাসের জন্যে,নগদ লভ্যাংশ নেয়া হলেই টাকা তুলে ফেলেন, এই বার মৌসুমি ব্যবসায়ীরা আগের বছর গুলোর মতো বিনিয়োগ করছেন না।

প্রয়োজনে শেয়ার বিক্রি করতে না পেরে অস্বস্তি আছেন অসংখ্য বিনিয়োগকারীরা। ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কমের ফোনে ফোন করে বেশ কিছু বিনিয়োগকারী জানিয়েছেন বিষয়টি লিখুন, কিছু সমাধান জানান। আমাদের মতন অসংখ্য লোক শেয়ার বিক্রি করতে না পেরে বিভিন্ন ভাবে সমস্যাতে পরছেন।

ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কমে ফোন করে যে সব বিনিয়োগকারী তাদের আক্ষেপ তুলে ধরেছেন, নিন্মের তাদের বক্তব্য গুলি তুলে ধরা হলো।

 

একজন বয়স্ক অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী যিনি সব সময়ই ভাল মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ার কিনে থাকেন তার বিও একাউন্টে, সব গুলো শেয়ার ভাল মানের মৌলভিত্তির, তিনি এ বছর রোজার সময় কিছু স্কয়ার ফার্মার শেয়ার বিক্রি করে রমজান মাসে উমরাহ হজ্জে যাবার নিয়াত করেছিলেন।

কিন্তু তিনি শেয়ার লাভে থাকার পরে ও বিক্রি করতে পারছেন না, এবং হজ্জে যেতে পারলেন না। তিনি আক্ষেপ করে বলেছেন, আমি আমার শেয়ার বিক্রি করতে পারব না, এটা কেমন কথা! শেয়ার বিক্রিতে এমন বিধিনিষেধ মানুষ কিভাবে নিচ্ছেন আমি জানিনা, তবে আমি এইবার শেয়ার বিক্রি করতে পারলে এই বাজারে আর শেয়ার রাখব না। তিনি আক্ষেপ করে বললেন এই ফ্লোরের কারণে আমি লাভে থাকা সত্ত্বেও স্কয়ার ফার্মার শেয়ার বিক্রি করে, উমরাহ হজ্জে যেতে পারলাম না।

বগুড়ার একজন বিনিয়োগকারী শেয়ার বাজারে ৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। তার ভাগ্নে বিদেশ থাকত। তার পাঠানো ৫ লাখ টাকা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেছিলেন। ভাগ্নে ২ বছর পরে টাকা নিবেন বললেও হঠাৎ টাকা চাওয়াতে তিনি শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলতে চাইলেও পারছেন না।

কারণ তার শেয়ার ফ্লোরে আটকা পরে আছে, তিনি লাফার্জ হোলসিম কিনেছিলেন। যদিও শেয়ার টি ভালো ২ বার লগদ লভ্যাংশ নিয়েছিল এখন কিছুটা লসে থাকলেও তিনি শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলতে পারছেন না ।বাজার নিয়ে ধারণা থাকলেও তিনি আক্ষেপ করে বলেছেন, কি নিয়ম বাবা আমি লসে বিক্রি করতে চাই তাও বিক্রি করতে পারছিনা। শেয়ার বিক্রি করতে না পেরে ভাগ্নের কাছে ছোট হতে হয়েছে। ভবিষ্যতে আর এই ব্যবসা করবো কিনা সন্দেহ আছে।

 

একজন তরুণ আদম ব্যবসায়ী, বিদেশে লোক পাঠান। কিছু টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন শেয়ার বাজারে কিছু লাভ ও করেছিলেন। হঠাৎ তিনি ভালো দামে একটি জমি কেনার জন্য পেল, কিছু টাকা দিয়ে বানা দিয়েছিলেন। গত মাসে তার জমির রেজিস্ট্রি হবার কথা ছিল। তিনি পরিকল্পনা করেছিলেন হাতে থাকা শেয়ারের অর্ধেক শেয়ার বিক্রি করে জমি রেজিষ্ট্রেশন করবেন। পরিকল্পনা মোতাবেক শেয়ার বিক্রি করতে চাইলে বাঁধে বিপত্তি, বিক্রি করতে পারলেন না।ফলশ্রুতিতে তিনি আর সেই জমিটি রাখতে পারলেন না। তিনি আক্ষেপ করে বললেন এটা কোন কথা?! আমার শেয়ার আমি বিক্রি করবো, কিন্তু কি যে এক ফ্লোর টোলরের ঝামেলায় শেয়ার বিক্রি ভেস্তে গেল। শেয়ার বিক্রি করতে না পেরে এত সুন্দর জমিটি হাতছাড়া হয়ে গেল।

 

একজন বিনিয়োগকারী বিদেশে থাকতেন বিয়ার জন্যে টাকা জমিয়েছিলেন, সে টাকা সহজে যাতে তুলতে পারেন সেজন্যই শেয়ার বাজারে লগ্নি করেছিলেন। শেয়ার বাজারে ভালোই লাভও করেছিল। এখন বিও একাউন্টে শাপকো স্পিনিং এর শেয়ার আছে। কিন্তু তিনি বিক্রি করতে পারছেনা বিধায় বিয়ের কেনকাটা করতে পারছেন না।

 

একজন বিনিয়োগকারী ফ্যামিলিসহ ইংল্যান্ড চলে যাবেন,প্লান ছিল হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে খরচের টাকা তুলবেন। কিন্তু তিনি না পেরে হতাশার সুরে বললেন, কি আর করা অন্য খাত থেকে টাকাটা নিলাম। কিন্তু ভবিষ্যতে আর শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ইচ্ছা থাকলেও, ইচ্ছেটা হারিয়ে ফেললাম ফ্লোর নামক এই অদ্ভুত ব্যাপার এর জন্যে।

 

একজন বড় ব্যবসায়ী তার বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে। বছরের একটা সময় শেয়ার বাজারে বড় ধরনের বিনিয়োগ করতেন, আবার প্রয়োজনে ফান্ড তুলে নিতেন তার অন্য ব্যবসায় টাকা কাজে লাগাতেন। বিশেষ করে রোজার আগে টাকা তুলতেন কিন্তু এই বছর টাকা তুলতে না পেরে হতাশা নিয়ে আক্ষেপ করে বলেন, শুধু আমি না আমার বন্ধু বান্ধবরাও ফ্যাডাপ তারা আর শেয়ার ব্যবসা করবেনা।

 

যথাযথ কর্তৃপক্ষের উচিৎ ফ্লোর প্রাইজ নিয়ে নতুন করে ভাবা। প্রয়োজনের সময়ে ছোট বিনিয়োগকারীরা কিভাবে সহজে শেয়ার বিক্রি করতে পারে তার সুব্যবস্থা করা। সহজে একটি সমধান আছে বলে মনে করেন একজন বাজার বিশ্লেষক। তিনি বলেন যেহেতু ফ্লোর প্রাইজের নিচে ব্লকে লেনদেন হচ্ছে,সাধারন বিনিয়োগকারীদের সুবিধার জন্যে অন্তত ১ লাখ টাকার পরিমান শেয়ার ব্লক মার্কেটের মাধ্যমে লেনদেন করার সুযোগ দিলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উপকার হবে।

Author

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আপনি এটাও পড়তে পারেন

3 Responses

  1. ফ্লোরে আটকে পরে অনেকেই শেয়ার বাজারে আর আসবেনা আগামিতে ,আমার ৩ জন কলিগ ও এমন বলছেন,সত্যিই ফ্লোর প্রাইজ শেয়ার বাজারের জন্যে রক্ষবাচক হলেও বর্তমানে এটা অনেকের গলার কাটা হয়ে গেছে

  2. ফ্লোরের কারণে অনেক ফান্ড সাইড লাইনে ।মানুষ চায় না বাজারের উঠানামা ধরে রাখুক ,তারা চান সাভাবিক থাকবে বাজারের সবকিছু ।ক

  3. এক লক্ষ করলে খরাপ না,মন্দের ভাল,সে-তো ১০% কমেই সেল করতে হবে। আর যারা সেখানে বাই করছেন,তারা একটু ফ্লোরের উপরে উটলেই ১২/১৫% লাভ পেলেই শেয়ার সেল করছে,তাতে মার্কেট আর সামনে এগুতে এগুতে পারছে না,আরেকটা মজার বিষয় যে এক ভদ্রলোক bpml ১০%% কমে কিনার চেষ্টা করছেন,কিন্তু তিনি পাচ্ছেন না,কি যে হচ্ছে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

শেয়ার বাজার
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!