সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা মির্জ্জা এবি মোঃ আজিজুল ইসলাম বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ শতাংশ। কিন্তু বর্তমানে দেশে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি। কীভাবে ৯ শতাংশ থেকে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে, তার কোনো নির্দেশনা নেই।
সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘বাজেট নিয়ে এখন আর সাধারণ মানুষের আগ্রহ নেই। কারণ, এখানে সাধারণ মানুষের জন্য কিছুই নেই। বাজেট নিয়ে আমরা যারা আলোচনা করছি, তা নিয়ে সংসদে আলোচনা হবে না। কারণ, ধরতে গেলে বাজেট এরই মধ্যে পাস হয়ে গেছে। দু–একটি জায়গায় হয়তো পরিবর্তন আসলে আসতে পারে।’
বাজেট–পরবর্তী এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা আজিজুল ইসলাম ও সালেহউদ্দিন আহমেদ। রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্র্যাক বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকস ফোরাম এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সেখানে আলোচক হিসেবে অংশ নেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ও সালেহউদ্দিন আহমেদ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি ফিন্যান্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মমিনুল ইসলাম, নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান স্নেহাশীষ মাহমুদ অ্যান্ড কোং–এর অংশীদার স্নেহাশীষ বড়ুয়া। ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক তানিয়া আকতার অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
আলোচকেরা আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন, মূল্যস্ফীতিসহ যেসব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেগুলো গ্রহণযোগ্য। কিন্তু সমস্যা হবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে। কারণ লক্ষ্যমাত্রাগুলো বাস্তবায়নের যথাযথ পদক্ষেপ বাজেটে নেই।
বাজেটোত্তর এ আলোচনায় মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ব্যাংক খাতে যেসব সমস্যা বিরাজ করছে, বাজেটে সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত কোনো কথা বলেননি অর্থমন্ত্রী।
বিশেষ করে খেলাপি ঋণ নিয়ে কোনো কথাই বলা হয়নি। তিনি আরও বলেন, বাজেটে গরিব মানুষের সহায়তায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু এ বরাদ্দ বণ্টনের ক্ষেত্রে তিন ধরনের সমস্যা রয়েছে। প্রথমত, যাঁরা সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় আসার কথা নয়, তাঁরা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। দ্বিতীয়ত যাঁদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা, তাঁরা অন্তর্ভুক্ত হন না। তৃতীয়ত সরাসরি বরাদ্দের তহবিল তছরুপ হয়।
সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দেশে খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে। এসব ঋণ আদায় হচ্ছে না। টাকা বাইরে চলে যাচ্ছে। এসব নিয়ে কোনো কাজ না করে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যস্ত ব্যাংকের এমডিরা বিদেশ যেতে পারবেন না, এ নির্দেশনা নিয়ে। দেশে বর্তমানে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তার জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা উচিত ছিল।
রপ্তানি ও প্রবাসী আয়কে গুরুত্ব দেওয়া দরকার ছিল। এ ছাড়া দারিদ্র্য, কৃষি ও শিল্প খাতের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বাজেটে এসব বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা দেখলাম না।
শুধু পেছনের গল্প শোনানো হয়েছে।’ আইপিডিসির সিইও মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অবশ্যই রাস্তাঘাটসহ দেশের অবকাঠামোর উন্নয়ন চাই। সেই সঙ্গে সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য সুশাসন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, বিচারব্যবস্থার উন্নতিসহ একটি ব্যবসা সহায়ক পরিবেশও চাই।’
Author
-
'ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম' একটি নির্ভরযোগ্য শেয়ার বাজার ভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল। অর্থ ও বাণিজ্য, রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি, প্রতিবেদন, বিশ্লেষণমূলক লেখা প্রকাশ করে।
View all posts
'ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম' শেয়ার মার্কেটের প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সততার সহিত পরিবেশন করে এবং কোন সময় অতিরঞ্জিত, ভুল তথ্য প্রকাশ করেনা এবং গুজব ছড়ায়না, বরং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে বদ্ধ পরিকর। এটি একটি স্বাধীন, নির্দলীয় এবং অলাভজনক প্রকাশনা মাধ্যম।