বিদেশে রোড শো করে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করা যায় না। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে হলে বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের মাধ্যমে সৎ, যোগ্য ও বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্ব দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আর্থিক খাত বিশ্লেষক মামুন রশীদ।
আজ শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
মামুন রশীদ বলেন, বিগত সরকারের সময় বিদেশে রোড শো’র নামে আমলা ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের আশির্বাদপুষ্টরা বিদেশে আনন্দ ভ্রমণ করেছে। এসব শো’র নামে অনৈতিকভাবে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় করা হয়েছে। সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন তাদের দায়িত্বের বাইরে যেয়ে এসব রোড শো করেছে। এ সময় তিনি ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধের পাশাপাশি ঋণ প্রাপ্তি সহজীকরণ, আমলাদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার জরুরি বলেও মন্তব্য করেন।
বেক্সিমকো গ্রুপের কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের বেতন নিয়ে যে অসন্তোষ চলছে। প্রয়োজনে এসব প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য সম্পদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ অধিগ্রহণ করে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা প্রদানের ব্যবস্থা করার পরামর্শও দেন তিনি। একই সঙ্গে এ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নামে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও প্রভাব খাটিয়ে যারা ঋণ নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ বলেও জানান মামুন রশীদ।
আওয়ামী লীগ শাসনামলে অসৎ উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা হলেও সৌদি আরবের আরামকো, কোরিয়ার স্যামসাং ও অ্যামাজন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেনি। তাছাড়া, ডলার সংকটের কারণে ইত্তেহাদ ও ফেসবুক তাদের বিনিয়োগ সংকোচন করেছে বলেও জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান বলেন, ডলার সংকট, উচ্চ সুদহার, অধিক শুল্ক দুর্নীতি, অর্থ পাচার, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সেবা প্রাপ্তিতে ভোগান্তি, জ্বালানি সংকট, আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ নানা কারণে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারছে না। বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ থেকে তাদের মুনাফা, লভ্যাংশ ও পুঁজি ফেরত নিতে পদে পদে হয়রানি, ঘুষ ও দুর্নীতির শিকার হয়। ফলে তারা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয় না।
জিডিপির মিথ্যা পরিসংখ্যান, উন্নয়নের মিথ্যা গল্প, সুশাসনে ঘাটতি থাকলে ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট বাধাগ্রস্ত হয়। বিদেশীরা তখন দেশের বিনিয়োগ কাঠামোকে বিশ্বাস করতে চায় না। ফলে তারা বিনিয়োগ নিরাপত্তা না পেয়ে বাংলাদেশে না এসে মালয়েশিয়া, ভারত, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোতে বিনিয়োগ করছে বলেও জানান তিনি।