ঢাকা শেয়ার বাজার

৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বুধবার ২২ মাঘ ১৪৩১

বেক্সিমকো গ্রুপের ১৬ কারখানা বন্ধ: শ্রমিকদের বেতন দেবে জনতা ব্যাংক

সবার আগে শেয়ার বাজারের নির্ভর যোগ্য খবর পেতে আপনার ফেসবুক থেকে  “ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম” ফেসবুক পেজে লাইক করে রাখুন, সবার আগে আপনার ওয়ালে দেখতে। লাইক করতে লিংকে ক্লিক করুন  facebook.com/dhakasharebazar2024

আলোচিতসমালোচিত বেক্সিমকো গ্রুপ কর্তৃপক্ষ, তৈরি পোশাকের রপ্তানি ক্রয়াদেশ না থাকা কাঁচামাল আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলতে না পারায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬টি কারখানা লেঅফ বা বন্ধ ঘোষণা করেছে

কারখানাগুলো বন্ধ থাকলেও শ্রম আইন অনুযায়ী ডিসেম্বর জানুয়ারির বেতনভাতা পরিশোধের জন্য ঋণ দেবে জনতা ব্যাংক।

জানা গেছে, সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের বন্ধ হওয়া কারখানাগুলোয় কাজ করেন প্রায় ৩০ হাজার পোশাক শ্রমিক।

অন্তর্বর্তী সরকার গত ২৪ নভেম্বরবেক্সিমকো শিল্প পার্কের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটিগঠন করে। শ্রম কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যবিশিষ্ট এই উপদেষ্টা কমিটি গঠিত হয়।

গত রবিবার সচিবালয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এই কমিটির তৃতীয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়, শ্রমিকদের বেতনভাতা পরিশোধে আরও দুই মাস জনতা ব্যাংক থেকে ঋণসহায়তা দেওয়া হবে। তারপর আর কোনো সহায়তা নয়।

উপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্তের পর ওই দিনই, অর্থাৎ রবিবার ১৬ কারখানায় লেঅফঘোষণা করে বেক্সিমকো। নোটিশে বলা হয়, কারখানায় কোনো কাজ না থাকায় ১৬ ডিসেম্বর থেকে শ্রম আইন অনুযায়ী লেঅফ থাকবে। লেঅফ চলাকালে শ্রমিকেরা আইন অনুযায়ী মজুরি পাবেন। সময় শ্রমিকদের সশরীর কারখানায় এসে হাজিরা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

জানতে চাইলে গনমাধ্যম কর্মীদের শ্রমসচিব এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘বেক্সিমকোর পোশাক কারখানাগুলো আমরা সচল করার চেষ্টা করেছি। তবে গ্রুপটির কর্মকর্তারা আমাদের কোনো ধরনের সহায়তা করছিলেন না। চার মাস ধরে সরকার বেক্সিমকোর শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছে। এভাবে তো চলতে পারে না। তাই উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আরও দুই মাস জনতা ব্যাংক ঋণ দেবে। তারপর কারখানা চলবে নাকি বন্ধ হবে, সেটি তাদের (বেক্সিমকো) সিদ্ধান্ত। তিনি জানান, বেক্সিমকো ফার্মা শাইনপুকুর সিরামিকস কারখানা চালু থাকবে।

সহযোগিতা না করার অভিযোগের বিষয়ে বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচালক (অর্থ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স) ওসমান কায়সার চৌধুরী গনমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘আমরা দুই মাস আগে কারখানা লেঅফ করেছিলাম। তবে জোর করে সেটি প্রত্যাহার করানো হয়। তাতে আমাদের ১৫০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘ঋণপত্র খুলতে না পারায় আমরা ক্রয়াদেশ নিতে পারিনি। আমরা সরকারকে বলেছিলাম, ঋণপত্র খোলার ব্যবস্থা করে দিন।আমরা মাসে মাসে ব্যাংকের ঋণ শোধ করে দেব। সহায়তা না পেলে কারখানা বন্ধ করা ছাড়া গতি নেই।

গাজীপুরের সারাব এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ২৪টি কারখানায় কাজ করেন প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক। তবে ঋণ খেলাপি হওয়ায় রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কাঁচামাল আমদানি করতে পারছে না বেক্সিমকোর কোম্পানিগুলো। এতে বিদেশি ক্রেতারা ক্রয়াদেশ অন্যত্র স্থানান্তর করে। প্রতি মাসে গড়ে তিন কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বেক্সিমকো।

ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সালমান এফ রহমান গ্রেপ্তার হন। অনেক ব্যাংকের সঙ্গে বেক্সিমকোর লেনদেন থাকলেও শুধু জনতা ব্যাংকে ঋণপত্র খোলা হতো। জনতায় গ্রুপটির ২৩ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে বড় অংশই এখন খেলাপি। গ্রুপটির ঋণ একক ঋণগ্রহীতার সীমাও অতিক্রম করায় বেক্সিমকোর নতুন করে ব্যাংক ঋণ নেওয়ার পথও বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে নিয়মিত বেতনভাতা দিতে না পারায় বেক্সিমকো গ্রুপের একাধিক কারখানায় শ্রমঅসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকদের মাসিক বেতন ৬০ কোটি টাকা আরকর্মকর্তাদের বেতন ১৫ কোটি টাকা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ব্যাংক কোম্পানি আইনেরদুটি ধারা শিথিল করে জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে বেক্সিমকোর কারখানার শ্রমিককর্মচারীদেরবেতনভাতার জন্য ঋণের ব্যবস্থা করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

সম্প্রতি হাইকোর্টে এক রিটের শুনানিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৬টিব্যাংক ৭টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বেক্সিমকোর ৭৮টি প্রতিষ্ঠানের দায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা।

জানা গেছে, বেক্সিমকোর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ হলেও বস্ত্রকল গুলো চলছে। পাঁচটি বস্ত্রকলে কাজ করেন প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক। বস্ত্রকলগুলো সাবকন্ট্রাক্টে বা ঠিকা কাজ করে চালানোর পরিকল্পনার কথা জানান বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচালক ওসমান কায়সার চৌধুরী। লেঅফ করা কারখানার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আবার চালু করার চেষ্টা করব। তবে শেষ পর্যন্ত কী হবে জানি না।

Author

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আপনি এটাও পড়তে পারেন

একটি রেসপন্স

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

শেয়ার বাজার

আপনি এই পৃষ্ঠার কন্টেন্ট কপি করতে পারবেন না।