ঢাকা শেয়ার বাজার

৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বুধবার ২২ মাঘ ১৪৩১

ব্যাংকগুলো যদি উৎপাদনমুখী খাতে ঋণ দিয়ে মুনাফা করতো, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি সমৃদ্ধ হতো

সবার আগে শেয়ার বাজারের নির্ভর যোগ্য খবর পেতে আপনার ফেসবুক থেকে  “ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম” ফেসবুক পেজে লাইক করে রাখুন, সবার আগে আপনার ওয়ালে দেখতে। লাইক করতে লিংকে ক্লিক করুন  facebook.com/dhakasharebazar2024

ব্যাংকগুলো যদি উৎপাদনমুখী খাতে ঋণ দিয়ে মুনাফা করতো, তাহলে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি সমৃদ্ধ হতো বলে মনে করেন সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।

সরকারের অর্থ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সাবেক এ আমলা  বলেন, ‘আমরা দেখছি, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ঘরে নেমে এসেছে। এ অবস্থায়ও ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বাড়ছে। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ না করেও ব্যাংকের মুনাফা বৃদ্ধির সংবাদ ভালো কিছু নয়।

মুসলিম চৌধুরী বলেন, ‘সরকার ট্রেজারি বিল-বন্ডের মাধ্যমে ব্যাংক খাত থেকে ১২-১৩ শতাংশ সুদে ঋণ নিচ্ছে। সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকেও ঋণ নেয়া হচ্ছে। উচ্চ সুদের এসব ঋণ সরকারের আর্থিক সংগতি আরো সংকুচিত করছে। এসব ঋণের সুদ আগামী ১০-২০ বছর পর্যন্ত পরিশোধ করতে হবে। এমনিতেই আমাদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সরকারের বরাদ্দ বাড়ানোর চাপ আছে। গুণগত মানসম্পন্ন অবকাঠামো নির্মাণের প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। কিন্তু সরকার যেভাবে উচ্চ সুদের ঋণ বাড়াচ্ছে, তাতে দীর্ঘ মেয়াদে জনগণের ওপর করভারের চাপই বাড়ছে। কর-জিডিপি অনুপাতের দৃশ্যমান উন্নতি না হলে সরকারের ঋণনির্ভরতা কমানো সম্ভব হবে না।

দেশের ব্যাংকগুলোর এতদিন আয়ের প্রধান উৎস ছিল বেসরকারি খাত। মুনাফা করত শিল্প ও সেবা খাতে দেয়া ঋণের সুদ ও কমিশন থেকে। কিন্তু এ মুহূর্তে ব্যাংকের আয় ও মুনাফার প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে সরকারি কোষাগার। ব্যাংকগুলো এখন ব্যক্তি খাতকে না দিয়ে সরকারকেই বেশি ঋণ দিচ্ছে। যার ফলে সদ্য সমাপ্ত বছরে বেশির ভাগ ব্যাংকের রেকর্ড পরিমাণ পরিচালন মুনাফা বেড়েছে।

দেশের প্রথম সারির সবল বাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা বেড়েছে

সদ্য সমাপ্ত বছরে ব্যাংকের অর্জিত মুনাফার বড় অংশ এসেছে সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ থেকে। এক বছর ধরেই সরকারের ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহার ১১-১৩ শতাংশ, যা নিকট অতীতে দেখা যায়নি। এত উচ্চ সুদের কারণে ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগৃহীত আমানতের বড় অংশই সরকারকে ঋণ দেয়ার কাজে ব্যবহার করছে। এতে ব্যাংকের মুনাফা বাড়লেও সরকারের সুদ খাতের ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশি সুদে ঋণ নেয়ায় এ খাতে সরকারের ব্যয়ও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। আর সুদ খাতের বাড়তি ব্যয় সংস্থানে জনগণের ওপর নিত্যনতুন কর আরোপের পথে হাঁটছে সরকার। এতে মূল্যস্ফীতির চাপে দিশাহারা সাধারণ মানুষ আরো বেশি দুর্ভোগে পড়ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সরকারের পরিচালন খাতে ব্যয় হয়েছে ৮২ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল সুদ পরিশোধেই ৪২ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। অর্থাৎ, প্রথম প্রান্তিকে সরকারের পরিচালন ব্যয়ের ৫১ শতাংশই ছিল সুদ ব্যয়। এর আগে কখনই সরকারকে সুদ খাতে এত বেশি ব্যয় করতে দেখা যায়নি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকেও সুদ ব্যয় ছিল পরিচালন ব্যয়ের মাত্র ২৭ দশমিক ৯ শতাংশ। বিপুল অংকের সুদ পরিশোধসহ পরিচালন ব্যয় মেটাতে ৪৩ ধরনের পণ্য ও সেবায় মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে রেস্তোরাঁয় খাবারের বিলের ওপর ভ্যাট ৫ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশে উন্নীত করার মতো সিদ্ধান্তও রয়েছে।

বিল-বন্ডের পাশাপাশি ব্যাংক ঋণের সুদহার এতটা উসকে ওঠার পেছনে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির প্রভাবই সবচেয়ে বেশি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কথা বলে ব্যাংক ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ থেকে বাড়িয়ে প্রায় ১৬ শতাংশে উন্নীত করা হয়। নীতি সুদহারও (রেপো রেট) ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির প্রভাবে দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। উল্টো গত নভেম্বরে মূল্যস্ফীতির গড় হার বেড়ে ১১.৩৮ শতাংশে ঠেকেছে।

সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির অংশ হিসেবে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৯.০৮ শতাংশ। এক অংকের সে লক্ষ্যও অর্জিত হয়নি। গত বছরের নভেম্বরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার ৭.৬৬ শতাংশে নেমে এসেছে। বিপরীতে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে লক্ষ্যের চেয়েও বেশি। এ খাতে ১৪.০২ শতাংশ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও গত নভেম্বরে ঋণ প্রবৃদ্ধি সাড়ে ২০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।

ঋণের সুদহার বৃদ্ধির তুলনায় আমানতের সুদহার না বাড়ানোয় ব্যাংকগুলোর স্প্রেড (ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান) বেড়েছে। ২০২৩ সালের জুনে ব্যাংক খাতের গড় স্প্রেড ছিল ২.৯৩ শতাংশ। ২০২৪ সালের অক্টোবরে তা বেড়ে ৫.৮৭ শতাংশে উঠেছে। স্প্রেড বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকের আয় ও মুনাফা বাড়ছে। বিপরীতে ঋণগ্রহীতারা পড়ছেন ক্ষতির মুখে।

উচ্চ সুদে সরকারকে ঋণ দিয়ে ব্যাংকগুলোর মুনাফা কতটা বেড়েছে তার একটি চিত্র পাওয়া যায় রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের রিচালন মুনাফা দেখে। ২০২৪ সালে এসে পরিচালন মুনাফা পেয়েছে রেকর্ড ৫ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। সরকারকে আয়কর পরিশোধ ও নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণের পরও ১ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা থাকতে পারে। রেকর্ড এ পরিচালন মুনাফার ৪৫ শতাংশই ট্রেজারি কার্যক্রম থেকে ।

ব্র্যাক ব্যাংক আগের বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে পরিচালন মুনাফায় প্রায় ৭২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেয়েছে । বেসরকারি খাতের এ ব্যাংকটির মুনাফার বড় অংশও এসেছে ট্রেজারি খাত থেকে। কেবল গত বছরের প্রথম নয় মাসেই (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) বিনিয়োগ খাত থেকে ১ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা আয় করেছে ব্যাংকটি। ২০২৩ সালের একই সময়ে যেখানে এ খাত থেকে আয় ছিল ৯২৫ কোটি টাকা। গত বছরের প্রথম নয় মাসে সরকারি বিল-বন্ডে ৮ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকার বিনিয়োগ বাড়িয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। সেপ্টেম্বরের পর এ বিনিয়োগ আরো বাড়ানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সিটি ব্যাংকও ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করে গত বছর বিপুল অর্থ আয় করেছে । প্রথম প্রজন্মের বেসরকারি ব্যাংকটি ২০২৪ সালে রেকর্ড ২ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা পেয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে সরকারি বিল-বন্ডে সিটি ব্যাংকের বিনিয়োগ ছিল মাত্র ৬ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা। কিন্তু মাত্র নয় মাসের ব্যবধানে তথা গত বছরের সেপ্টেম্বরে এসে এ খাতের বিনিয়োগ স্থিতি ১১ হাজার ২৮০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। গত বছরের প্রথম নয় মাসেই বিনিয়োগ খাত থেকে আয় করে ১ হাজার ১২ কোটি টাকা, যেখানে ২০২৩ সালের একই সময়ে ছিল মাত্র ৩২৭ কোটি টাকা।

গত কয়েক বছর মুনাফাসহ সবক’টি সূচকে ধারাবাহিক উন্নতি করছে প্রথম প্রজন্মের বেসরকারি ব্যাংক পূবালী। এ ব্যাংকটিও সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ড থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এসে বিল-বন্ডে ব্যাংকটির বিনিয়োগ স্থিতি দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকায়। বিনিয়োগ খাত থেকে ব্যাংকটি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসেই ১ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা আয় করে।

কেবল এ কয়েকটি ব্যাংক নয়, বরং পর্যাপ্ত তারল্য প্রবাহ তথা আমানত ছিল এমন সবক’টি ব্যাংকই ২০২৪ সালে ট্রেজারি বিল-বন্ড থেকে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ আয় করেছে। ব্যাংকগুলোকে বাড়তি সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে সরকারের ঘাটতি বাজেটের চাপ দ্বিগুণ হয়েছে। সুদ খাতে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধির চাপ কতটা বেড়েছে, সেটি উঠে এসেছে অর্থ বিভাগের আর্থিক (ফিসক্যাল) প্রতিবেদনে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের করা ওই প্রতিবেদনের তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সরকারের পরিচালন খাতে ব্যয় হয়েছে ৮২ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল সুদ পরিশোধেই ৪২ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়ে গেছে। প্রথম প্রান্তিকে সরকারের পরিচালন ব্যয়ের ৫১ শতাংশই ছিল সুদ ব্যয়। এর আগে কখনই সুদ খাতে এত বেশি ব্যয় করতে দেখা যায়নি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকেও পরিচালন ব্যয়ের মাত্র ২৭ দশমিক ৯ শতাংশ ছিল সুদ ব্যয়।

প্রথম প্রান্তিকে সুদ খাতে ব্যয়ের মধ্যে ৩৯ হাজার ২৫২ কোটি টাকাই গেছে স্থানীয় ঋণের সুদ পরিশোধে। এ সময়ে বিদেশী ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা। এ হিসাব আমলে নিলে সুদ খাতে সরকার প্রতি মাসে গড়ে ১৪ হাজার ১২৯ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। বাকি সময় এ হারে সুদ পরিশোধ করা হলে অর্থবছর শেষে এর পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকায়। যদিও এ খাতে চলতি অর্থবছরের বাজেটে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

ব্যাংক খাতে তারল্য সংকটের প্রভাবে তিন বছর ধরে ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহার বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ৯১ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদহার ছিল ২.৩৬ শতাংশ। ধারাবাহিকভাবে বেড়ে গত ডিসেম্বরে তা ১১.৭০ শতাংশ পর্যন্ত ওঠে। সে হিসাবে সবচেয়ে কম মেয়াদি এ বিলের সুদহার বেড়েছে ৩৯৬ শতাংশ বা প্রায় পাঁচ গুণ। ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার ২৭২ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এ ট্রেজারি বিলের গড় সুদহার ছিল ৩.১৯ শতাংশ। ডিসেম্বরে ছয় মাস মেয়াদি বিলের সুদহার ১১.৯০ শতাংশ পর্যন্ত ওঠে। এক বছর বা ৩৬৪ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহার বেড়েছে ২৪৯ শতাংশ। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ মেয়াদের এ বিলের সুদহার ৩.৪৪ শতাংশ থাকলেও তা এখন ১২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

ট্রেজারি বিলের মতোই সুদহার চার-পাঁচ গুণ বেড়েছে ট্রেজারি বন্ডের। ডিসেম্বরে দুই বছর মেয়াদি বন্ডের সুদহার ছিল ১২.৩০ শতাংশ। আর তিন বছর মেয়াদি বন্ডের সুদহার ১৩.২০ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছে। আরো বেশি মেয়াদি বন্ডের সুদহার ছুঁয়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। যদিও তিন বছর আগে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ মেয়াদি (২০ বছর) বন্ডের সুদহারও ৬ শতাংশে সীমাবদ্ধ ছিল।

বেশ কয়েকজন অর্থনীতিবিদ জানান , বিল-বন্ডের অস্বাভাবিক এ সুদ বৃদ্ধি ব্যাংকগুলোকে বেসরকারি খাতবিমুখ করে তুলেছে ।‘বর্তমানে দেশের অর্থনীতিতে যেসব কর্মকাণ্ড চলছে, সেগুলোকে কোনোভাবেই স্বাভাবিক বলা যায় না। স্বাভাবিক অর্থনীতির কোনো বৈশিষ্ট্যই এখানে উপস্থিত নেই। যেসব খাত থেকে ব্যাংকের মুনাফা আসার কথা সেখান থেকে আসছে না। বেসরকারি খাতের তুলনায় এখন সরকারকে ঋণ দেয়াই বেশি লাভজনক মনে করছে ব্যাংকগুলো। সরকারও ব্যাংক খাত থেকে বেশি সুদে ঋণ নিচ্ছে, আর সে সুদের জোগান দেয়ার জন্য নানামুখী কর আরোপ করছে। এগুলো করতে গিয়ে মূল্যস্ফীতি কমানোর মতো প্রধান লক্ষ্য থেকেও সরকার বিচ্যুত হয়ে গেছে। বিরাজমান পরিস্থিতিতে জনগণ সব দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত।’

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর লুটপাট বন্ধ হয়েছে, কিন্তু আগের সরকারের মতোই সঙ্কটে থাকা ব্যাংকগুলিকে বাঁচিয়ে রাখার তৎপরতা চলছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কথা বলে ব্যাংক ঋণের সুদহার বাড়ানো হয়েছে, অথচ বাজার ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরানো হয়নি। এ কারণে সাধারণ মানুষ সুদহার বাড়ানোর কষ্ট ভোগ করলেও মূল্যস্ফীতি কমেনি। অর্থনীতিতে বিরাজমান কোনো সংকটেরই সমাধান হয়নি।

এছাড়া বিল-বন্ডের অস্বাভাবিক এ সুদ বৃদ্ধির ফলে  ব্যাংক ও বিভিন্ন ইনিস্টিউটুট ও বড় বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারের বিনিয়োগ তুলে নিয়ে বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করাতে শেয়ার বাজারে আস্থার সঙ্কট তৈরি হয়েছে।

Author

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আপনি এটাও পড়তে পারেন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

শেয়ার বাজার

আপনি এই পৃষ্ঠার কন্টেন্ট কপি করতে পারবেন না।