শেয়ার বাজার বিশ্বব্যাপী একটা স্থায়ী বিনিয়োগ কেন্দ্র, যেখানে সহজেই বিনিয়োগ করা যায় এবং সহজেই মূলধন তুলে নেয়া যায়।
যে কারণে শেয়ারবাজারে মানুষ বিনিয়োগ করে। শেয়ারবাজারে বারবার মানুষ বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিনিয়োগ করতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন।
কিন্তু বাংলাদেশের বাজারে তাই হচ্ছে বারবার।এর মূল কারণ আইপিও প্রক্রিয়ায় তালিকাভুক্ত হতে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে অতিরঞ্জিত করে মিথ্যা প্রতিবেদনের মাধ্যমে তালিকাভূক্ত হওয়া।
শেয়ার বাজারে অতিরঞ্জিত করে মিথ্যা প্রতিবেদনের মাধ্যমে রুগ্ন গার্বেজ কোম্পানি তালিকাভূক্ত করতে বসে আছে কিছু অসাধু ইস্যুয়ার কোম্পানি ও চার্টার্ড ফার্ম কোম্পানি। এদের যোগসাজশে একটি সাধারণ মানের কোম্পানিকে কাগজ কলমে অসাধারণ বানিয়ে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত করে।
যার ফলশ্রুতিতে ২/৩ বছর যেতে না যেতেই আইপিওতে আসা কোম্পানিগুলি রুগ্ন হতে শুরু করে।যে ইতিহাস বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে অসংখ্য উদাহরণ হয়ে আছে।
শেয়ার বাজারের একটি বিশেষ অংশ হল আইপিও। আইপিও আসবে এটাই স্বাভাবিক। আইপিও আসবে এটা খারাপ কিছু না। বাজারের আইপিও আসবে তাতে আমাদের কোন অভিযোগ নেই। কিন্তু আমরা বস্তা পচা (মানহীন) আইপিও চাইনা।দুস্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো।
নিন্মমানের আইপিও আনার দরকার কি? বছরে ৩–৪ টা কোম্পানি বাজারে তালিকা ভুক্ত করেন, যার মান ভালো। বিশ্বমানের অসংখ্য কোম্পানি বাংলাদেশে আছে, সেগুলো আনারচেস্টা করুন, তাতে বাজারের উন্নয়ন হবে।
আমরা চাই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, এইচ এস বি সি ব্যাংকের মতো ব্রান্ড ব্যাংক বাজারে তালিকাভুক্ত হোক।শুধু মাত্র শর্ত পূরনের জন্যে মানহীন ব্যাংকগুলো আইপিওতে এনে শেয়ার বাজারের কোন লাভ নেই।
গত কয়েক বছর ধরে যেখানে তালিকাভুক্ত অনেক ব্যাংক ফেস ভ্যালুর নিচে ও আশেপাশে লেনদেন হচ্ছে, সেখানে শুধু মাত্র শর্ত পূরনের জন্যে মানহীন ব্যাংকগুলো বাজারে তালিকাভুক্ত করে বাজারের উপর যেন বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। সম্প্রতি ব্যাংক খাতের গ্লোবাল ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকের মতো আইপিও বাজারে আসা কি সঠিক ছিল? এমন আইপিও আমরা চাই না।
শুনেছি মানহীন পদ্মা ব্যাংক ও আইপিওতে আসার প্রক্রিয়ায় ছিল।
মেটলাইফ আলিকো ইন্সুরেন্স, ইউনিলিভার, বসুন্ধরা গ্রুপ, পারটেক্স গ্রুপ, সিটিগ্রুপ, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস, অফসোনিন ফার্মা, ঈগলু আইস্ক্রিম, ইপিলিয়ন গার্মেন্টস, টান্ডারড গার্মেন্টসের মতো অসংখ্য আরও ভালো ভালো ব্রান্ড কোম্পানি যাতে শেয়ার বাজারে আসে, সে জন্যে শেয়ারে তালিকাভুক্ত করতে কোম্পানির জন্যে বিশেষ সুযোগ সুবিধা রাখতে হবে। তাহলে ভালো কোম্পানি শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হবে।
আজেবাজে (মানহীন) কোম্পানি তালিকাভুক্ত না করাই ভালো, দেশের নামীদামী কোম্পানি গুলোকে কিছুটা সুযোগ দিয়ে হলেও বাজারে নিয়ে আসা উচিত। পাশাপাশিবাজারের ভীত হবে শক্ত ও উন্নত। তাহলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অনেক বেড়ে যাবে।
কিন্তু আফসোস, ঘটছে বিপরীত। ২০১০ সাল পরবর্তী সময়ে অন্তত ১০০ এর বেশি রুগ্ন ও গার্বেজ কোম্পানি আইপিও এর মাধ্যমে বাজারে এসে বাজারের ভারসাম্য নষ্ট করে দিয়েছে।
যদি পারেন ইনসেপটা, অপসোনিনের মতো ঔষধ কোম্পানি তালিকাভুক্ত করেন আমরা আজেবাজে নামসর্বস্ব নতুন ঔষধ কোম্পানি আর চাইনা। কেননা এই বাজারটি দুর্বল হয়ে যাওয়ার মূল কারণ বস্তাপঁচা আইপিও অনুমোদন পাওয়া।
কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ দেখে শুনে পারলে ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করুন। আজেবাজে কোম্পানি তালিকাভুক্ত করে বাজারকে আরও রুগ্ন করবেন না।আশ্চর্যজনকহলেও সত্য বাজারে ৪০০ এর অধিক কোম্পানি থাকলেও বিনিয়োগ উপযোগী ১০০কোম্পানি খুজে পাওয়া যায়না।