বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের সুনাম আছে সারা বিশ্বজুড়ে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সর্বোচ্চ অংশ আসে এই গার্মেন্টস শিল্প থেকে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প যাত্রা শুরু করে ৭০ দশকের পরে। তবে ৮০ দশকের শেষের দিকে মূলত ৯০ দশকে রপ্তানিমুখী খাত হিসেবে এই শিল্পের উন্নয়ন ঘটতে থাকে। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানিমুখী শিল্পখাত।
২০২১-২২ অর্থবছরে শুধুমাত্র তৈরি পোশাক শিল্প থেকেই রপ্তানি আয় হয়েছে রেকর্ড পরিমান বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে এখন আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন প্রচুর গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি আছে। তারা বেশ সুনামের সাথে ব্যবসা করে যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী।
আশ্চর্যজনক হলেও সত্য বাংলাদেশে বস্ত্র খাতের এতো এতো ভালো কোম্পানি থাকলেও, শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত ৫৮ কোম্পানির মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি বাদে, বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বিনিয়োগককারীদের কোন আগ্রহ নেই। দেশে এত ভালো ভালো টেক্সটাইল আছে, কিন্তু এই ভালো কোম্পানি গুলি শেয়ার বাজারে তালিকা ভুক্ত না হয়ে, মানহীন বা অযোগ্য কোম্পানি গুলি কিভাবে শেয়ার বাজারে তালিকা ভুক্ত হয়েছে ভাবতে অবাক লাগে।
দেশের ভালো মানের বস্ত্র খাতের কোম্পানি গুলি কেন শেয়ার বাজারে আসছেনা। তাদেরকে আনার জন্য কি সুযোগ-সুবিধা দেয়া যায়, সে ব্যাপারে শেয়ার বাজার কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া উচিত।
আমাদের শেয়ার বাজারে বস্ত্র খাতের যে কোম্পানি গুলো আছে, হাতে গোনা কয়েকটি বাদে বেশির ভাগ কোম্পানির অবস্থাই রুগ্ন। বাজার কর্তৃপক্ষের এই রুগ্ন কোম্পানি গুলি নিয়ে কাজ করা দরকার। কিভাবে কোম্পানি গুলির পারফরমেন্স ভালো করা যায়।
দেশের প্রধান রপ্তানি খাত টেক্সটাইল হলেও শেয়ার বাজারের তেমন কোন ভূমিকা নেই। দেশের রপ্তানি খাতের শীর্ষে থাকা টেক্সটাইল সেক্টরের হওয়া উচিৎ ছিল, দেশের শেয়ার বাজরে শীর্ষ সেক্টর। কিন্তু দুখঃজনক হলেও সত্য, তার ছিটেফোঁটাও দেখছি না।
বাংলাদেশে যত বৈদেশিক মুদ্রা আসে, তার সিংহভাগই আসে টেক্সটাইল এবং জনশক্তি রপ্তানী থেকে। তাই সরকারের উচিৎ টেক্সটাইল খাত ও প্রবাসীদের দিকে নজর দেওয়া।
আমেরিকা, ইউরোপসহ পৃথিবীর অনেক দেশের বড় বড় মার্কেটের দোকানে যে পোশাকে মেইড ইন বাংলাদেশ লেখা, ওটা উন্নত মানের বলে বিদেশিরা জানেন। বাংলাদেশের তৈরি ঐ পোশাক আমেরিকা, ইউরোপসহ পৃথিবীর অনেক দেশে উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়।
উল্লেখ্য, কেন এত কিছুর পরেও আমাদের দেশের শেয়ার বাজারের টেক্সটাইল সেক্টরের কেন এই করুন অবস্থা, ভাবতে অবাক লাগে!
বিভিন্ন সূত্র থেকে শুনতে পাই টেক্সটাইলের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর অর্থ পাচার হয় বিদেশে। যদি এটা সত্যি হয়, তা দেশের জন্যে খুবই বিপদজনক। এর সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত।
যেহেতু বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত গার্মেন্টস শিল্প। তাই ভবিষ্যতে এই অর্থনৈতিক খাতকে বাঁচাতে হবে, শুদ্ধ করণের মাধ্যমে। বাংলাদেশ সরকারকে টেক্সটাইল সেক্টরে যোগ্য লোকবল তৈরি করতে সাহায্য করতে হবে।করতে হবে তদারকিও। বস্ত্র শিল্প চালানোর জন্য যোগ্য লোক খুঁজে বের করতে হবে, অন্যথায় এদেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।
প্রচুর ভারত ও শ্রীলংকার লোক আমাদের টেক্সটাইল সেক্টরের উচ্চ পদে চাকরি করছে। কিন্তু কেন আমাদের দেশে অভিজ্ঞ টেক্সটাইল বিশেষজ্ঞ নেই? যদি এখানে দক্ষ লোক তৈরি করা যায় তাহলে দেশের টাকা দেশেই থাকতো।
পরিশেষে বলব শেয়ার বাজারে তালিকা ভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি গুলো নিয়ে কর্তৃপক্ষের সুদক্ষ দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। কিভাবে এই খাতের কোম্পানি গুলির উন্নয়ন করা যায়। আপাতত বস্ত্র খাতের সামগ্রিক সুনজর ও স্বচ্ছ নজরদারিতে আনলে শেয়ার বাজারেও ভূমিকা রাখবে।
9 Responses
Yes, that is correct. Bangladeshi garments are popular in the UK and can be found in a variety of retail stores in the country. The UK is a major market for Bangladeshi garments.
ধন্যবাদ আপনাকে
ইয়েস, টেক্সটাইল খাত ডলার আয়ের প্রধান খাত । বাংলাদেশ রপ্তানি আয়ের সিংহ ভাগ আসে এই খাতে। তার পরই remittance । আমাদের উচিত এই খাতে সু শাসন আমলে নিয়ে ঢেলে সাজানো। শেয়ার বাজার তথা টেক্সটাইল ও জনশক্তি বিভাগে ব্যাপক বিনিয়োগ করা।সরকারের উচিত ডলার আয়ের এই দু খাতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া। শেয়ার বাজার এই নেতিবাচভাবে পড়ে আছে institute, আইসিবি আস্থার অভাব। জেনেরাখা ভালো এই ঠিক মত চললে দেশ দুর্ভিক্ষ কবলে পড়বে না ।
Issuing companies look for low-quality companies to corrupt. Because good companies do not make much profit if they are listed, they manipulate with the company owners by listing weak companies, thereby making ordinary investors losers.
ধন্যবাদ আনোয়ার ভাই,
Welcome brother
Thanks for the nice comment
টেক্সটাইল বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি এতে কোনো সন্দেহের চুল পরিমাণ অবকাশ নেই কিন্তু সেই টেক্সটাইলের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহের প্রধান কারণ বলে আমি মনে করি টেক্সটাইল মালিকদের ঠকবাজী মানসিকতা যার দরুন তারা প্রতিবছর বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারণা করে( হাতে গোনা দুই একজন মালিক ব্যতীত ) আর এই জালিয়াতির বিযয়গুলোকে কমিশন কঠোরভাবে দমন না করাও অন্যতম কারণ বলে আমি মনে করি। পাশাপাশি সরকারের সদিচ্ছারও যতেষ্ট অভাব রয়েছে বলে আমি মনে করি। আপনার লেখা প্রত্যেকটি পয়েন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই জায়গা গুলোয় নজর দেওয়ার মাননীয় কমিশনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
Very nicely explained as it should be