ঢাকা শেয়ার বাজার

১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার ৩ পৌষ ১৪৩২

ঋণ দেওয়ার এমন ব্যবস্থা করা উচিত, যাতে বেশি টাকা ঋণ চাইলেই তাদের শেয়ারবাজারে যেতে হয়

সবার আগে শেয়ার বাজারের নির্ভর যোগ্য খবর পেতে আপনার ফেসবুক থেকে  “ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম” ফেসবুক পেজে লাইক করে রাখুন, সবার আগে আপনার ওয়ালে দেখতে। লাইক করতে লিংকে ক্লিক করুন  facebook.com/dhakasharebazar2024

একক শিল্পগোষ্ঠীকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে এমন ব্যবস্থা করা যেতে পারে, যাতে বেশি টাকা ঋণ চাইলেই তাদের শেয়ার বাজারে যেতে হয়। তাহলে দেশের শেয়ার বাজারের ভিত্তি শক্ত হবে পাশাপাশি ব্যাংকের উপরে চাপ কমে আসবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন ফিন্যান্সিয়াল এক্সেলেন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মামুন রশীদ।

দেশের অর্থনীতিবিদেরা পরামর্শ দিয়েছেন কর দেওয়ার উপযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও যাঁরা ফাঁকি দিচ্ছেন, তাঁদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত। এ জন্য আইন প্রণয়নেরও সুপারিশ করেন তাঁরা। অর্থনীতিবিদদের কাছ থেকে এমন পরামর্শও আসে যে যাঁদের দুটি বাড়ি, দুটি গাড়ি ও এক কোটি টাকার বেশি ব্যাংকে আমানত আছে, তাঁদের কাছ থেকে যেন প্রত্যক্ষ, অর্থাৎ বাড়তি কর আদায় করা হয়।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গত রবিবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক্‌-বাজেট আলোচনায় অর্থনীতিবিদেরা এসব পরামর্শ দেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী, অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেককে সঙ্গে নিয়ে বৈঠকটি করেন অর্থ উপদেষ্টা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ সময় পাওয়ারপয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়ন তথা অর্জনের চিত্র তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জায়েদি ছাত্তার, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান ও নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক এম এম আকাশ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরী প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ ছাড়া আলোচনায় অংশ নেন ফিন্যান্সিয়াল এক্সেলেন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মামুন রশীদ, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয় মন্ট্রিলের ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ এম আহসান প্রমুখ।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, অধ্যাপক রেহমান সোবহান বাজেটে দেওয়া বরাদ্দ অনুযায়ী যতটুকু ব্যয় হয়েছে, তার প্রভাব বিশ্লেষণের পরামর্শ দিয়েছেন। করের আওতায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁরা কর দেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে আইন প্রণয়নের পরামর্শও দেন তিনি। কর অব্যাহতি কমিয়ে আনার কথা বলেন এই অর্থনীতিবিদ।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরী বলেছেন, আগামী বাজেটের আকার যদি সাড়ে সাত লাখ কোটি টাকাও হয়, তাতেও কোনো সমস্যা নেই। দেখতে হবে বাজেটে দেওয়া বরাদ্দের ব্যয়টুকু গুণগত মানসম্পন্ন হচ্ছে কি না।

আলোচনায় প্রায় সবাই কর অব্যাহতি কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। অর্থনীতিবিদেরা হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, প্রতিবছর বাজেটের আগে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করে পরামর্শ নেওয়া হলেও বাজেটে তার প্রতিফলন থাকত না। এবার যাতে সে রকম না হয়। এ নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা আগামী বাজেটে তাঁদের পরামর্শের প্রতিফলন থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

আলোচনা শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, প্রায় সবাই পরামর্শ দিয়েছেন বাজেট যেন উচ্চাভিলাষী না করা হয়। তা করা হবেও না। আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা থাকবে। আর মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হবে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘সবাই পরামর্শ দিয়েছেন এবং আমিও আগে থেকে বলে আসছি যে আগামী বাজেটে আমরা একটা পদচিহ্ন রেখে যেতে চাই। সে লক্ষ্যেই বাজেট করা হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ট্রেডিং করপোরেশনের (টিসিবি) মজুত ব্যবস্থা ভালো রাখার পরামর্শও এসেছে।’

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ভাতা কার্যকরভাবে বিতরণ, প্রয়োজনে টিসিবির কার্ডধারীর সংখ্যা ১ কোটি থেকে বাড়িয়ে ১ কোটি ২০ হাজারে উন্নীত করা, ভালো গবেষণা করা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আরও গবেষণা করতে প্রণোদনা দিয়ে উৎসাহিত করা, প্রকল্প বাস্তবায়নে বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে হঠাৎ ব্যয় বৃদ্ধির বদলে সারা বছর গুরুত্বের সঙ্গে ব্যয়ের ব্যবস্থা করা, বাজেটে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা, কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন ইত্যাদি পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক এম এম আকাশ গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, তিনি বলেছেন যে টিসিবির মজুত ব্যবস্থাটা এমন করতে যাতে দাম বাড়লে গুদাম থেকে পণ্য বাজারে ছেড়ে দেওয়া যায়। আর বাজারে দাম কমলে টিসিবি যেন কেনার ব্যবস্থা করে। পোশাকশ্রমিকদের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করার পরামর্শও দেন তিনি।

দুটি বাড়ি, দুটি গাড়ি ও ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি আছে,এমন আমানতকারীদের কাছে থেকে প্রত্যক্ষ কর আদায়ের পরামর্শ তিনিই দিয়েছেন বলে জানান এম এম আকাশ। গ্যাস খাতে কূপ খননে বাজেট বরাদ্দ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের (এসএমই) শিল্প খাতের ব্যবসায়ীরা যাতে সহজে ঋণ পান, সে ব্যাপারে নীতি পদক্ষেপের সুপারিশ করেন তিনি।

ফিন্যান্সিয়াল এক্সেলেন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মামুন রশীদ বলেন, দ্বৈত কর চুক্তি হলেও কার্যকর হচ্ছে না। তিনিসহ অন্যরাও পরামর্শ দিয়েছেন যেদিন বাজেটে ঘোষণা করা হয়, সেদিন থেকেই তা কার্যকর হয়ে যায়। অথচ প্রস্তুতির জন্য সরকারেরই কিছুদিন সময় দরকার। একক শিল্পগোষ্ঠীকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে এমন ব্যবস্থা করা যেতে পারে, যাতে বেশি টাকা ঋণ চাইলেই তাদের শেয়ারবাজারে যেতে হয়।তাহলে দেশের শেয়ার বাজারের ভিত্তি শক্ত হবে পাশাপাশি ব্যাংকের উপরে চাপ কমে আসবে।

Author

  • 'ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম' একটি নির্ভরযোগ্য শেয়ার বাজার ভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল। অর্থ ও বাণিজ্য, রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি, প্রতিবেদন, বিশ্লেষণমূলক লেখা প্রকাশ করে।

    'ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম' শেয়ার মার্কেটের প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সততার সহিত পরিবেশন করে এবং কোন সময় অতিরঞ্জিত, ভুল তথ্য প্রকাশ করেনা এবং গুজব ছড়ায়না, বরং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে বদ্ধ পরিকর। এটি একটি স্বাধীন, নির্দলীয় এবং অলাভজনক প্রকাশনা মাধ্যম।

    View all posts
Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আপনি এটাও পড়তে পারেন
শেয়ার বাজার

আপনি এই পৃষ্ঠার কন্টেন্ট কপি করতে পারবেন না।