মানব সভ্যতার অন্যতম বড় স্বপ্ন হলো পৃথিবীর বাইরেও আরেকটি বসযোগ্য গ্রহ খুঁজে পাওয়া—যেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নিয়মিতই দূরবর্তী নক্ষত্রের চারপাশে নতুন গ্রহ আবিষ্কার করছেন।
এই গ্রহগুলোকে বলা হয় এক্সোপ্ল্যানেট (Exoplanet)। এদের মধ্যে কিছু গ্রহ পৃথিবীর মতো পরিবেশ ধারণ করতে পারে বলেই বিজ্ঞানীরা এগুলোকে “দ্বিতীয় পৃথিবী” বা habitable planet হিসেবে আখ্যা দেন।
মহাকাশের দূরত্ব এতটাই বিশাল যে, আমাদের সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টরি পৃথিবী থেকে প্রায় ৪ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। সেখানে পৌঁছাতেই বর্তমান প্রযুক্তিতে বহু হাজার বছর সময় লেগে যাবে। এর বাইরে থাকা সম্ভাব্য বসযোগ্য গ্রহগুলো আরও অনেক দূরে, যা আজকের প্রযুক্তিতে কল্পনার বাইরে।
বর্তমানে যে রকেট ও মহাকাশযান প্রযুক্তি বিদ্যমান, তা দিয়ে কোনো দূরবর্তী habitable planet-এ পৌঁছানো সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে উন্নত প্রযুক্তি তৈরি হলে সেখানে যাত্রা করা যেতে পারে, তবে সেটি কবে সম্ভব হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো নির্দিষ্ট ধারণা নেই।
সম্প্রতি বিভিন্ন আলোচনায় বলা হয়েছে যে “দ্বিতীয় পৃথিবী”-তে পৌঁছাতে ২ কোটি ৬০ লক্ষ বছর লাগবে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন—এই তথ্যের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। আসলে যাত্রার সময় নির্ভর করে গ্রহটির দূরত্ব এবং তখনকার প্রযুক্তিগত সক্ষমতার ওপর। তাই নির্দিষ্ট কোনো বছর বা সময়সীমা এখন বলা সম্ভব নয়।
“দ্বিতীয় পৃথিবী” আবিষ্কার মানবজাতির জন্য নিঃসন্দেহে বড় একটি পদক্ষেপ। তবে সেখানে পৌঁছানোর সময় নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা না ছড়িয়ে বৈজ্ঞানিক তথ্যের ওপর নির্ভর করা জরুরি। প্রযুক্তি যত উন্নত হবে, ততই মানুষের সেই স্বপ্নের যাত্রা বাস্তবতার কাছাকাছি আসবে।