বিগত সময়ে দুর্বল কোম্পানির তালিকাভুক্তি, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সূচক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা, নানা অনিয়ম ও কারসাজি বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারবিমুখ করেছে। বিশেষ করে ফ্লোর প্রাইসের মতো ব্যবস্থা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী মিলনায়তনে‘পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম।
ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘নানা অনিয়ম ও ব্যর্থতার কারণে গত ১৫ বছরে আমাদের শেয়ারবাজারের অবস্থা এতই নাজুক হয়েছে যে দৈনিক গড় লেনদেনের দিক থেকে আমরা শ্রীলঙ্কার চেয়েও অনেক পিছিয়ে গেছি। এ সময় বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমে অর্ধেক হয়ে গেছে। সেই অবস্থা থেকে বাজারকে দ্রুত একটি ভালো অবস্থায় ফিরিয়ে আনার মতো সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে শেয়ারবাজার–সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।’
ডিএসইর চেয়ারম্যান আরও বলেন, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দুর্বল মানের কোম্পানি কারসাজির বড় হাতিয়ার। আবার দুর্বল কোম্পানি তালিকাচ্যুত করার আইনি ব্যবস্থাও দুর্বল। ফলে বন্ধ কোম্পানির শেয়ারও এই বাজারে চড়া দামে কেনাবেচা হয়। এ কারণে শেয়ারবাজারে বহুজাতিক কোম্পানিসহ ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে ডিএসইর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন বা ডিবিএর সভাপতি সাইফুল ইসলাম দাবি করেন, ‘শেয়ারবাজারে গত ১৫ বছরে যেসব অন্যায়, অনিয়ম ও জালিয়াতি হয়েছে, তা খুঁজে বের করা দরকার ভবিষ্যতের প্রয়োজনে। এ জন্য একটি তথ্য অনুসন্ধান (ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং) কমিটি করা দরকার। আমরা সবাই জানতে চাই, কোথায় কোথায় কী কী অনিয়ম ও অন্যায় হয়েছে।’ একই সঙ্গে তিনি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দুর্বল ও বন্ধ কোম্পানি তালিকাচ্যুত করতে দ্রুত তালিকাচ্যুতি (ডিলিস্টিং) নীতিমালা প্রণয়নেরও দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘শেয়ারবাজারে সুশাসন নিশ্চিত করা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বতন্ত্র নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি গঠন করা হয়েছিল। এ জন্য কমিশনকে বিপুল আইনি ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি আমরা দেখছি, শেয়ারবাজার-সংক্রান্ত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থা মন্ত্রণালয়নির্ভর হয়ে পড়ছে। এটি আমাদের কারও কাম্য নয়। আশা করি, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিএসইসি তার পূর্ণাঙ্গ আইনি ক্ষমতা ব্যবহারে সচেষ্ট থাকবে।
ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান বলেন, গত ১৫ বছরে শেয়ারবাজারে যেসব কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে বাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করেছে, সেগুলোর ওপর একটি বিশ্লেষণ দরকার। এসব আইপিও কার স্বার্থে কেন তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল, সেটি জানা দরকার।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান এ কে এম হাবিবুর রহমান,বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন বা বিএমবিএর সভাপতি মাজেদা খাতুন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) কামরুল ইসলাম, শাকিল রিজভী, মোহাম্মদ শাহজাহান, রিচার্ড ডি রোজারিও, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাত্ত্বিক আহমেদ শাহ প্রমুখ।
Author
-
'ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম' একটি নির্ভরযোগ্য শেয়ার বাজার ভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল। অর্থ ও বাণিজ্য, রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি, প্রতিবেদন, বিশ্লেষণমূলক লেখা প্রকাশ করে।
View all posts
'ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম' শেয়ার মার্কেটের প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সততার সহিত পরিবেশন করে এবং কোন সময় অতিরঞ্জিত, ভুল তথ্য প্রকাশ করেনা এবং গুজব ছড়ায়না, বরং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে বদ্ধ পরিকর। এটি একটি স্বাধীন, নির্দলীয় এবং অলাভজনক প্রকাশনা মাধ্যম।