ঢাকা শেয়ার বাজার

২৯ অক্টোবর ২০২৫ বুধবার ১৩ কার্তিক ১৪৩২

পা হারিয়েও রোজিনা পরজীবী নন, বরং কর্মঠ এক শ্রমিক

সবার আগে শেয়ার বাজারের নির্ভর যোগ্য খবর পেতে আপনার ফেসবুক থেকে  “ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম” ফেসবুক পেজে লাইক করে রাখুন, সবার আগে আপনার ওয়ালে দেখতে। লাইক করতে লিংকে ক্লিক করুন  facebook.com/dhakasharebazar2024

বরিশালের মুলাদী উপজেলার খেজুরতলা গ্রামের মেয়ে রোজিনা বেগম । সাত বছর বয়সে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তার একটি পা হারিয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান। অভাবী পরিবারের সন্তান তিনি, ফলে সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হন তিনি।

খুব অল্পবয়সে তার বাবা-মা একজন অটোচালকের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেয়। বিয়ের পরে স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় এসে বসবাস করতে শুরু করেন। সংসারে যুক্ত হয় আরও দুজন সন্তান- একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। ভালই চলছিল তার সংসার জীবন।

হঠাৎ স্বামী সুমন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। দুই সন্তানকে নিয়ে অকুল সাগরে ভাসতে থাকেন। সিন্ধান্ত নিলেন, তিনি ঢাকায় রিক্সা চালাবেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা পরোয়া না করে তিনি রিক্সা চালানো শিখলেন এবং গ্রেজ থেকে দৈনিক ২০০শত টাকায় রিক্সা ভাড়ায় নিয়ে ঢাকার রাস্তায় রিক্সা চালানো শুরু করলেন। কিন্তু রিক্সা চালিয়ে যা আয় হতো তা দিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করা বেশ কষ্টসাধ্য। এছাড়া তার কোন উপায় ছিল না।

রোজিনা বেগমের ছোট ভাই আফান বাস করেন পটুয়াখালির মির্জাগঞ্জে। ভাইয়ের সঙ্গে চলে আসেন মির্জাগঞ্জে। এখানে এসেও তিনি একপায়ে রিক্সা চালাতে শুরু করেন। দুই সন্তানকে নিয়ে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।

২০২১ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রোজিনা পেয়েছেন সম্মাননা ক্রেস্ট ও পাঁচ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা। হয়তো অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন এবং আগামীতে দেবেন। এরকম হাজার রোজিনা বেগম আমাদের সমাজে রয়েছে। কেউ সকল বাধা অতিক্রম করে সাহস নিয়ে চ্যালেজিং পেশায় আসেন, আবার কেউ লোকলজ্জার ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধী রোজিনা বেগম একটি আইকন। ইচ্ছে থাকলে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করে বেঁচে থাকার সংগ্রামে বীরের মতো বাঁচার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

পরজীবী হয়ে বেঁচো না, বরং সৎ কর্মের মধ্য দিয়ে লড়াইটা চালিয়ে যাও- এক পা নিয়ে রিক্সা চালানো রোজিনার সংগ্রাম আমাদের সেই শিক্ষাটাই দিচ্ছে। রোজিনা বেগমের কর্মে উৎসাহিত হোক পরজীবী নারীরা। একটি রিক্সা, পাঁচ হাজার টাকা অনুদান কিংবা একটি ঘরই নয়, বরং রোজিনা বেগমকে জয়িতা পুরুস্কার দেওয়ার দাবী জানাই। কেননা রোজিনা বেগমের কর্মে একনিষ্ঠতা, উদ্যম ও সাহস মানুষকে কর্ম করতে প্রেরণা যুগিয়ে যাবে।

Author

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আপনি এটাও পড়তে পারেন
শেয়ার বাজার

আপনি এই পৃষ্ঠার কন্টেন্ট কপি করতে পারবেন না।