যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসের নাম আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। বাকি ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতার পালা। সেটিও শেষ হলো গত বৃহস্পতিবার।
আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীপদ গ্রহণের পর প্রথম ভাষণে নিজের নীতি স্পষ্ট করেন তিনি। পাশাপাশি বলেছেন, তিনি বিশ্ব জুড়ে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে লড়বেন। তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তার অগ্রাধিকারের তালিকায় গাজা, ন্যাটোকে সমর্থন ও মধ্যবিত্তদের কর হ্রাসকে রেখেছেন। হ্যারিস জিতলে তিনি হবেন আমেরিকার প্রথম নারী ও এশীয় বংশোদ্ভূত প্রেসিডেন্ট।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীপদ গ্রহণের পর প্রথম ভাষণে কমলা হ্যারিস বলেন, তিনি আমেরিকার সব মানুষের জন্য প্রেসিডেন্ট হতে চান। তিনি বলেছেন, আমি সব আমেরিকানের হওয়ার জন্য প্রার্থীপদ গ্রহণ করছি। আমেরিকার সব মানুষের হয়ে, তাদের কাহিনি বিশ্বের এই মহান দেশে স্বর্ণাক্ষরে লেখার জন্য প্রেসিডেন্ট হতে চাই।’
‘আমি জানি, বিভিন্ন রাজনৈতিক মতের মানুষ এই ভাষণ শুনছেন ও দেখছেন। তাদের কাছে আমি একটা কথাই বলতে চাই, আমি সেই প্রেসিডেন্ট হতে চাই, যিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করবেন, তাদের উচ্চাশা পূরণ করবেন। এমন একজন প্রেসিডেন্ট হতে চাই, যিনি নেতৃত্ব দেবেন, যিনি সবার কথা শুনবেন।’
কমলা হ্যারিস ভোটদাতাদের বলেছেন, ‘একটা নতুন পথে হাঁটার সুযোগ এসেছে। অতীতের তিক্ততা ভুলে, হতাশা মুছে দিয়ে এগোবার সুয়োগ এসেছে। একটা দল বা একটা গোষ্ঠী হিসেবে নয়, আমেরিকার মানুষ হিসেবে এগোনোর সুযোগ এসেছে। আমাদের আর পিছিয়ে যাওয়ার সুয়োগ নেই।’
বিভিন্ন মিডিয়ার বিশ্লেষকরা হ্যারিসের ভাষণকে শক্তিশালী হিসেবে বর্ণনা করে ২০০৮ সালের কনভেনশনে আমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বারাক ওবামার ভাষণের সঙ্গে তুলনা করেন।
হ্যারিস হচ্ছেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী এবং প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত যিনি প্রেসিডেন্ট পদের জন্য ডেমোক্রেটিক দলের মনোনয়ন গ্রহণ করলেন। ভাষণের শুরুতে হ্যারিস তার ভারতীয় মা এবং জামাইকা বংশোদ্ভূত বাবা নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন এবং বলেন কীভাবে তারা তার জীবন প্রভাবিত করেছে।
কমলা হ্যারিস বলেছেন, প্রেসিডেন্ট হতে পারলে তিনি ইউক্রেন ও ন্যাটোর পাশে শক্তভাবে দাঁড়াবেন। হ্যারিসের মতে, ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির সময় এসেছে। বন্দিদের মুক্তি দেওয়াটা জরুরি। আমি সবসময়ই ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারের পক্ষে।
কিন্তু গাজায় যা হয়েছে তা ভয়ংকর ও হৃদয় বিদারক।’ তিনি বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং আমি এই যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা করেছি। আমরা চেয়েছি, ইসরাইল যেন সুরক্ষিত থাকে এবং বন্দিরা যেন মুক্তি পান। ফিলিস্তিনি মানুষ যেন মর্যাদা, সুরক্ষা, স্বাধীনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার নিয়ে বাঁচতে পারেন।’
সূত্র- সিএনএন।