মূল্যস্ফীতি কমলে সংকোচনমূলক ব্যবস্থা থেকে সরে আসব, তখন সুদহার কমবে বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক পদক্ষেপ ও রাজস্ব নীতির সমন্বয়ের কারণে ২০২৫ সালের মে-জুন মাসে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামতে পারে।
দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ বিষয়ে গতকাল সোমবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এ কথা বলেন গভর্নর। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।
ওয়েবিনারে দেশের আর্থিক খাতের বিভিন্ন বিষয়ে আহসান এইচ মনসুরের কাছে জানতে চান বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান। আর গভর্নর সেসব বিষয়ে জবাব দেন। দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ বিষয়ে প্রতি মাসে একবার এ ধরনের ওয়েবিনার আয়োজন করছে বিডা। তাতে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কাউকে অতিথি হিসেবে রাখা হয়। গত অক্টোবর মাসে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সর্বশেষ গত অক্টোবরে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৮৭ শতাংশ। অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২.৬৬ শতাংশ আর অক্টোবরে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৩৪ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি কমাতে সরকার কয়েক দফায় নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। তাতে বেড়েছে ঋণ ও আমানতের সুদও।
ওয়েবিনারে গভর্নরের কাছে জানতে চাওয়া হয়, আর কত দিন দেশে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি চলবে? জবাবে গভর্নর বলেন, ‘গত মে মাস থেকে বাংলাদেশে মুদ্রানীতির সংকোচন শুরু হয়েছিল। আর বর্তমানে যে অর্থনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছে, সে আলোকে বলতে পারি, আগামী মে-জুন মাসে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামতে পারে। তারপর কয়েক মাসের মধ্যে তা ৬ শতাংশের নিচে নামতে পারে। সেটি হলে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি থেকে সরে আসব।’
আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমার লক্ষণ দেখা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘দেশে খাদ্যবহির্ভূত (নন-ফুড) মূল্যস্ফীতি ইতিমধ্যে টানা তৃতীয় মাসের মতো কমেছে। তবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখনো বেশি। এর কারণ, এই সময়ের মধ্যে আমাদের দেশে দুটি বন্যা হয়েছে। একই সঙ্গে দীর্ঘ সময় বৃষ্টি ছিল। ফলে শীতকালীন সবজি ও অন্যান্য স্থানীয় খাদ্যপণ্য বাজারে আসতে দেরি হয়েছে।’
গভর্নর জানান, দেশে শ্রমিক বিক্ষোভসহ বিভিন্ন অস্থিরতার মধ্যেও রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি রয়েছে। গত চার মাসে ১০ শতাংশ রপ্তানি বেড়েছে। আর জুলাই থেকে নভেম্বর মাসে প্রবাসী আয় ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।