ঢাকা শেয়ার বাজার

১ নভেম্বর ২০২৫ শনিবার ১৬ কার্তিক ১৪৩২

সব ধরনের অনিশ্চয়তা কেটে ঘুরে দাঁড়াবে কি দেশের শেয়ারবাজার?

সবার আগে শেয়ার বাজারের নির্ভর যোগ্য খবর পেতে আপনার ফেসবুক থেকে  “ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম” ফেসবুক পেজে লাইক করে রাখুন, সবার আগে আপনার ওয়ালে দেখতে। লাইক করতে লিংকে ক্লিক করুন  facebook.com/dhakasharebazar2024

বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের ইতিহাসে চরম হতাশার একটি বছর পার করলেন বিনিয়োগকারীরা। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে ২১৪ টি কোম্পানি ফ্লোরপ্রাইসে (সর্বনিম্ন দরে) আটকে আছে বহুদিন, অর্থাৎ তালিকাভুক্ত কোম্পানির একটি বড় অংশই গত বছরের বেশি সময় ধরে কোন লেনদেন হয়নি। যার মধ্যে বেশির ভাগ ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন শেয়ার রয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে মূল্য সূচকেও।

শেয়ারবাজারের ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই ৩০ সূচক ২০২৩ সালের প্রথম কার্যদিবসে ছিল ২১৯৩.৬০ পয়েন্টে।

আর বছরটির সর্বশেষ কার্যদিবসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২০৯৩.৮৩ পয়েন্টে।অর্থাৎ, সূচকটি .৬২ শতাংশ কমেছে।

এছাড়া ২০২৩ সালের প্রথম কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৬১৯৫.৩৭ পয়েন্টে। আর সর্বশেষ কার্যদিবসে তা সামান্য বেড়ে ৬২৪৬.৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। গত বছর (২০২৩) প্রধান সূচকটি বেড়ে সর্বোচ্চ ৬৩৬৭.৪২ পয়েন্টে ওঠে, যা আগের বছর (২০২২) ৭১০৫.৬৯ পয়েন্টে উঠেছিল।

গত বছরে (২০২৩) দেশের শেয়ারবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও)মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হবার কোম্পানি কমে গিয়েছে গত বছরে (২০২৩)  মাত্র টি কোম্পানি আইপিওতে শেয়ার ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করেছে, যা খুবই হতাশার। অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন, নতুন ২০২৪ সাল কেমন যাবে? সব ধরনের অনিশ্চয়তা কেটে কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে দেশের শেয়ারবাজার?

শেয়ার বাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিশ্লেষকদের অধিকাংশের মতে, বর্তমানে শেয়ারবাজারে একটি বড় বাধা ফ্লোরপ্রাইস। যে কারণে নতুন বিনিয়োগ আসছে না। কারণ, তালিকাভুক্ত কোম্পানির বেশির ভাগেরই শেয়ারদর ফ্লোরপ্রাইসে আটকে আছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাজারের মোট ফ্রিফ্লোট শেয়ারের বাজারমূল্য লাখ ৭২ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে লাখ ৩৫ হাজার ৭৩০ কোটি টাকাই ফ্লোরপ্রাইসে আটকে আছে, যা মোট বাজার মূল্যের ৭৯ শতাংশ। অর্থাৎ, ব্যক্তি, প্রাতিষ্ঠানিক বিদেশি বিনিয়োগকারীরা চাইলেও টাকার অঙ্কে তাদের মোট বিনিয়োগের ৭৯ শতাংশ শেয়ার কেনাবেচা করতে পারছেন না।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই)তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে মোট ২৪৪ কার্যদিবসে ডিএসইতে লাখ ৪১ হাজার ৬০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দৈনিক গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৭৮কোটি টাকা। অন্যদিকে ২০২২ সালে ২৪৪ কার্যদিবসে লাখ ৩৩ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়। দৈনিক গড়ে ৯৫৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।

হিসাবে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ৩৭৮ কোটি টাকা বা প্রায় ৪০ শতাংশ কম লেনদেন হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, যেহেতু ফ্লোর প্রাইসের কারণে অধিকাংশ শেয়ারের দর এক জায়গায় আটকে ছিল, আবার ফ্লোর প্রাইস উঠে গেলে শেয়ারের দর আরও কমে যেতে পারে, এই অনিশ্চয়তায় নতুনবিনিয়োগ আসেনি। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাজারে গতি ফেরাতে ফ্লোরপ্রাইস ওঠাতে হবেএটা যেমন ঠিক, তেমনি এটা এমন প্রক্রিয়ায় ওঠাতে হবে, তা যেন বাজারে নেতিবাচক প্রভাবনা ফেলে। বিষয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জকমিশনকে (বিএসইসি) তা গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে।

গত বছর আইপিও বাজারেও খরা ছিল। ২০২৩ সালে মাত্র ৩টি কোম্পানি আইপিওতে শেয়ার ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটির নিচে টাকা উত্তোলন করেছে। এর আগে একবছরে এত কম আইপিও আর নিকট অতীতে দেখা যায়নি। অর্থাৎ, কয়েক বছরের ব্যবধানে আইপিও বাজারে রীতিমতো ধস নেমেছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সূত্র বলেছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অনেক কোম্পানির আর্থিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। কারণে অনেক কোম্পানি যারা পুঁজিবাজারে আসতে চাইলেও এখনো আইপিওর জন্য আবেদন করেনি। এজন্য আইপিওর সংখ্যা কম। আর্থিক অবস্থা একটু ঘুরে দাঁড়ালেই অনেক কোম্পানি আইপিওর জন্যআবেদন করবে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাজার গতিশীল করতে ভালো মানের কোম্পানি আইপিও আনার বিকল্প নেই। বহুজাতিক ভালো কোম্পানিগুলো দেশের পুঁজিবাজারে আসছে না। এমনকি বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও সরকারি অনেক কোম্পানিও পুঁজিবাজারমুখী হচ্ছে না। এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে জোর দিতে হবে। কেন এসব কোম্পানিপুঁজিবাজারে আসছে না, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে।

বড় কোম্পানিগুলি  বিনিয়োগের টাকা সংগ্রহের জন্যে ব্যাংকের উপর নির্ভরশীল হচ্ছে ,যারফলে দিনকে দিন ব্যাংকগুলি রুগ্ন হয়ে যাচ্ছে।দেশের আর্থিক্ষাতের নীতিনির্ধারকদের এইব্যাপারে কঠোর হতে হবে , বড় কোম্পানিগুলি  বিনিয়োগের টাকা সংগ্রহের জন্যে শেয়ারবাজারে শেয়ার ছেড়ে টাকা তোলার উপরে জোর দিতে হবে তাতে আর্থিকভাবে দেশশক্তিশালী হবে এবং দেশে কমে যাবে ঋণখেলাপীদের পরিমান।

২০২৪ সালে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে এই প্রত্যাশা সকল বিনিয়োগকারীদের, সব ধরনের অনিশ্চয়তা কেটে কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বাজার ? এই প্রশ্ন সব শ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের।বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীদের ধারণা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে  দেশের শেয়ার বাজার ভালো হবে মুনাফা পাবেন সকল বিনিয়োগকারীরা।

Author

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আপনি এটাও পড়তে পারেন
শেয়ার বাজার

আপনি এই পৃষ্ঠার কন্টেন্ট কপি করতে পারবেন না।