সৌদি আরব অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব বাড়াতে চায় বাংলাদেশে। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিশ্বের বৃহত্তম জ্বালানি তেল কোম্পানি আরামকো ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনবার বাংলাদেশে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে। তখন তাতে সায় দেয়নি তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার।
তবে এবার অতীত ভুলে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব বাড়াতে চায় বাংলাদেশ-সৌদি আরব।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গতকাল আয়োজিত ‘সৌদি-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি: প্রবণতা, মূল চ্যালেঞ্জ ও দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তব্যে এমন বিষয় উঠে আসে।
এক থেকে দেড় বছরের মেয়াদে সংস্কার বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অল্প সময়ের মেয়াদে দায়িত্ব পালন করলেও আমরা অন্যদের জন্য একটি অনুসরণীয় পরিচ্ছন্ন পথ রেখে যেতে চাই।’
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে বহুমাত্রিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের বাণিজ্যের পরিমাণ বর্তমানে ২০০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর আরো প্রবৃদ্ধির অপার সম্ভাবনা রয়েছে।’
তহবিল সুরক্ষিত করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহে আমরা ১৬০ কোটি ডলার পেয়েছি এবং অল্প দিনের মধ্যে আরো ৭০ কোটি ডলার পাব। তবে অর্থ সংগ্রহ করা বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় হচ্ছে কোথায় অর্থ ব্যয় হচ্ছে এবং কীভাবে অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘দেশে অর্থনৈতিক সুযোগ আকৃষ্ট করার জন্য অনেক কিছু করতে হবে। এ বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছি যে আমাদের দেশ সবচেয়ে ভালো বিনিয়োগবান্ধব, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি সবসময় সত্যি নয়।’
বর্তমান সরকার অবস্থা পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে। এখন যদি সৌদি বিনিয়োগকারীরা আসে তবে ভালো একটি পরিবেশ দেখতে পাবেন বলেও তিনি জানান।
সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসেফ ইসা আল দুহাইলান বলেন, ‘আরামকো ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল নিয়ে তিনবার বাংলাদেশে এসেছিল, কিন্তু তাদের কেউ অভ্যর্থনা জানায়নি। কিন্তু আমরা অতীত নিয়ে কথা বলব না। আমরা ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলব।’
তার মতে, এখানে একটি তেল শোধনাগার স্থাপন করা হলে উৎপাদিত পণ্য বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলে সরবরাহ করা যাবে।
পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব (পূর্ব) মো. নজরুল ইসলাম ও পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বক্তব্য প্রদান করেন।