গতকাল সোমাবার (১৯ আগস্ট) শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গতকাল সোমবার তিনি বিএসইসিতে যোগ দিয়েছেন।
নতুন চেয়ারম্যানের প্রথম কাজ , এখন যারা নতুন কমিশনার আসবেন তাদের নিয়ে শক্তিশালী কমিশন গঠন করা।দেশের শেয়ার বাজারে গত ১৫ বছর ধরে অনিয়মের যে জঞ্জাল জমেছে, তা পরিষ্কার করে শেয়ার বাজারকে সুস্থ ও স্বাভাবিক ধারায় ফেরানোর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে নতুন চেয়ারম্যানকে। সুবিধাভোগী চক্র ভেঙে বাজারকে নিয়মনীতির মধ্যে ফেরানোই হবে নতুন কমিশনের প্রধান কাজ।তারপর বিএসইসির পাশাপাশি দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই ও সিএসই) পর্ষদ পুনর্গঠনই হবে বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যানের দ্বিতীয় প্রধান কাজ।
শেয়ার বাজারে কারসাজি বন্ধ ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানোই বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যানের প্রধান কাজ বলে তিনি জানিয়েছেন গতকাল। শেয়ারবাজারের ক্ষত সারিয়ে বাজারকে সুস্থ ও স্বাভাবিক করাই তাঁর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।এরপর অগ্রাধিকার দিতে হবে গত ১৫ বছরে দুই কমিশনের সব অনিয়ম–দুর্নীতির তদন্তে। সেই সঙ্গে নতুন করে যাতে বাজারে কোনো কারসাজি ও অনিয়মের ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে কঠোর আইনি ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সার্বিকভাবে শেয়ার বাজারের দিকে তাকালে দেখা যায়, শেয়ার বাজারের সর্বাঙ্গেই ব্যথা। ক্ষত স্থানে মলম দেওয়ার কাজটি শুরু থেকেই যথাযথভাবে করতে হবে নতুন কমিশনকে। অন্যথায় ব্যথার শরীরটি আরও পচেগলে গন্ধ ছড়াতে পারে। কেননা বিগত ১৫ বছরে শেয়ার বাজারের জন্যে ভাল কোন কাজ হতে দেখা যায়নি।
নতুন কমিশনের কাছে বিনিয়োগকারীদের আরও কিছু প্রত্যাশা ও দাবি হলো দুই স্টক এক্সচেঞ্জের পর্ষদ পুনর্গঠন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি, ভালো কোম্পানির তালিকাভুক্তি বাড়ানো ও বন্ধ কোম্পানি তালিকাচ্যুত করা, বিএসইসির দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, রোড শোর নামে অর্থ পাচারের ঘটনা তদন্ত, বিএসইসির জবাবদিহি নিশ্চিত করা, বিএসইসির আইনি ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ, মার্জিন ঋণের কাঠামোগত পরিবর্তন, মিউচুয়াল ফান্ড খাতে শৃঙ্খলা ফেরানো ইত্যাদি।
এদিকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান কাজে যোগদানের প্রথম দিন আজ মঙ্গলবার (২০ আগষ্ট) তৃতীয় কার্যদিবস দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির (ডিএসই) মূল্যসূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। পাশপাশি গত কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেনও কমেছে ।
আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ৬০.১৩ পয়েন্ট কমেছে এবং লেনদেন হয়েছে ৫১৮.৬১ কোটি টাকার ।
আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ৬০.১৩ পয়েন্ট কমেছে। বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৫৭১৫.৩৫ পয়েন্টে। এছাড়া, ডিএসইর অপর সূচক ‘ডিএসইএস’ ১৬.৪৫ পয়েন্ট কমে ১২২৯.৬৯ পয়েন্ট এবং ‘ডিএস-৩০’ সূচক ২৭.৮৬ পয়েন্ট কমে ২০৯৩.২৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
আজ ডিএসইতে ৫১৮.৬১ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে ৮০৭.১৫ কোটি টাকা। আজ ডিএসইতে গত কার্যদিবসে চেয়ে লেনদেন কম হয়েছে ২৮৮.৫৪ কোটি টাকার।
আজ ডিএসইতে মোট ৩৯৭ টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৪ টি কোম্পানির, বিপরীতে ৩০১ কোম্পানির দাম কমেছে। পাশাপাশি ৩২ টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ছিলো অপরিবর্তিত।