দেশের শেয়ার বাজারে চলছে অস্থিরতা। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নানান উদ্যোগের পরেও যেন কোন কূলকিনারা হচ্ছে না। বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীরা আটকে আছে ফ্লোর প্রাইজে। ফ্লোর থাকার পরে ও নাকাল বিনিয়োগকারীরা, শেয়ার বাজার ও তার সংশ্লিষ্টরা। কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছেনা।
যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমান কমিশনের অধিনে পুঁজিবাজারের অনুকূলে বেশ কিছু নিয়মকানুন আরোপ করা হয়েছে। অনেক অনিয়মও বন্ধ হয়েছে। যা বাজারের জন্য কল্যাণকর, এর জন্যে কমিশনের প্রতি অনেকেরই কৃতজ্ঞতা বোধ রয়েছে।
কিন্তু তারপরেও বহু অনিয়ম শেয়ার বাজারে বিদ্যমান। বাজারের সুশাসন ফিরিয়ে আনার জন্যে যথাযত কর্তৃপক্ষের আরো জোড়াল ভূমিকা রাখার প্রয়োজন।
বিনিয়োগকারীরা এখন আর শুনতে চাইছেনা, ইন্ডেক্স কত যাবে, ট্রেড কত হাজার কোটি টাকা হবে ইত্যাদি। মানুষ চাইছে স্বাভাবিক ও গতিময় বাজার। যে বাজারে মানুষ আস্থা নিয়ে বিনিয়োগ করবে নিশ্চিন্তে। কর্তৃপক্ষ বাজারের সব অনিয়ম দূর করুক। ভূয়া ইপিএস, ন্যাভ, মিথ্যা উৎপাদনের খবর, অযৌক্তিক লভ্যাংশসহ নানা রকম কারসাজি এগুলো বন্ধ করুক।
সারাবিশ্বের পুঁজিবাজারে সিন্ডিকেট আছে, সিন্ডিকেট বাজারেই অংশ বটে। তবে তাদের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার, যাতে অতি মাত্রার ক্ষতির কারণ না হয় এই সিন্ডিকেট। এরই প্রেক্ষিতে দেশের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ শিক্ষা ও সচেতনতাও জরুরী।
পুঁজিবাজারে ভালো শেয়ারের জোগান বাড়াতে হবে। অযোগ্য কোম্পানি যাতে বাজারে না আসতে পারে, সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে কমিশনকে। ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে মানুষ আস্থা পাবে। তাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্র বাড়বে, বড় হবে বাজার।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কমিশনের জন্যে করার আছে অনেক কিছু। তালিকাভুক্ত ভুঁইফোড় ও দুর্নীতিগ্রস্থ প্রতিষ্ঠানগুলির অনিয়ম বন্ধ করা প্রয়োজন। তালিকাভুক্ত কোম্পানি গুলিকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা সহ অডিটে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরী।
আশ্চর্যজনক হলেও সত্য দেশের অনেক ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে চায় না। তাদের কিভাবে তালিকাভুক্ত করা যায় সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
নতুন কোম্পানি বাজারে নিয়ে আসা প্রয়োজন। তাই বলে দূর্বল ও কম মানসম্পন্ন কোম্পানি শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত না করাই উত্তম।
দেশের আমজনতা কর্তৃপক্ষের কাছে চায় একটি দুর্নীতিমুক্ত শেয়ারবাজার। বাজারে সুশাসন থাকলে, আপন গতিতে বাজার গতিশীল হবে।
বলাই বাহুল্য দেশের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ শিক্ষা ও সচেতনতাও জরুরী।
না বললেই নয়, বাজার গতিশীল থাকলে শেয়ার বাজারে বিদেশী বিনিয়োগ না আসলেও চলার কথা। দেশেই ভেতরেই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার মত অনেকেরই অনেক টাকা আছে। দেশের বেশিরভাগ লোকের মধ্যে শেয়ার বাজার নিয়া ভীতি ও কিছু ভুল ধারণা আছে। সুশাসন ফিরে এলে মানুষের ভীতি ও ভুল ধারণা দূর হয়ে যাবে। বাজার হবে তরান্বিত ও গতিশীল। যা শেয়ার বাজার, দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কল্যাণকর।
পরিশেষে বলব পুজিবাজারে পুরোপুরি সুশাসন ফিরিয়ে আনলে ও সবার সন্মিলিত প্রচেষ্টা থাকলে, অচিরেই বাংলাদেশের পুজিবাজার বিশ্বে স্থান করে নিতে পারবে।
Author
-
'ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম' একটি নির্ভরযোগ্য শেয়ার বাজার ভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল। অর্থ ও বাণিজ্য, রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি, প্রতিবেদন, বিশ্লেষণমূলক লেখা প্রকাশ করে।
View all posts
'ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম' শেয়ার মার্কেটের প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সততার সহিত পরিবেশন করে এবং কোন সময় অতিরঞ্জিত, ভুল তথ্য প্রকাশ করেনা এবং গুজব ছড়ায়না, বরং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে বদ্ধ পরিকর। এটি একটি স্বাধীন, নির্দলীয় এবং অলাভজনক প্রকাশনা মাধ্যম।
5 Responses
চমৎকার সম্পাদকীয়।বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আরও অনেক লেখা চাই আমরা ।
ধন্যবাদ, সুন্দর পর্যালোচনা।
আপনাদের পোর্টালে লেখা দিতে কোন শর্ত আছে কি?
আপনার লেখা জমা দিন, ঐ সিম্বলে ক্লিক করলে কিছু আসে না।
আবার ও ধন্যবাদ
ঐ পোর্টাল জানুয়ারি থেকে চালু হবে,আপনার লেখা আমার হোয়াইটস আপে দেন প্রকাশ করে দিবনে।
শেয়ার বাজারের প্রতি মানুষের আস্থার বড্ড অভাব।টাকা কোন সমস্যা নয়।বাজার সাভাবিক হলে মানুষ চলে আসবে।
There is no good governance in the stock market of Bangladesh, people don’t invest because of that, if the market is stable, investors’ confidence in the market will return.