ঢাকা শেয়ার বাজার

৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বুধবার ২২ মাঘ ১৪৩১

ডলারের বাজারে অস্থিরতা কমে আসছে

সবার আগে শেয়ার বাজারের নির্ভর যোগ্য খবর পেতে আপনার ফেসবুক থেকে  “ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম” ফেসবুক পেজে লাইক করে রাখুন, সবার আগে আপনার ওয়ালে দেখতে। লাইক করতে লিংকে ক্লিক করুন  facebook.com/dhakasharebazar2024

দেশে ডলারের বাজারে এ মুহূর্তে কোনো অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে না। স্থিতিশীল হয়ে এসেছে মুদ্রাটির বিনিময় হার। ব্যাংক বা কার্ব মার্কেটে ডলারের সংকট নেই। ব্যাংকে রেমিট্যান্স পাঠালে প্রবাসীরা প্রণোদনাসহ ডলারপ্রতি ১২৩ টাকা পাচ্ছেন, যেখানে খুচরা বাজারে মিলছে ১২১-১২২ টাকায়। হুন্ডির চাহিদা কমায় খুচরা বাজারে ডলারের বিনিময় হার নিম্নমুখী বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

দেশে  যদিও দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে অস্থির ছিল বৈদেশিক মুদ্রার বাজার। ২০২২ সালের শুরুতে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৪ টাকা। সংকট তীব্র হয়ে ওঠায় বিনিময় হার বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। গত আড়াই বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ঘটেছে ৪২ শতাংশেরও বেশি। ডলারের দর স্থিতিশীল করতে গত মে মাসে ‘ক্রলিং পেগ’ নীতি গ্রহণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরও সমাধান মেলেনি, ব্যাংকের ঘোষিত দরের সঙ্গে কার্ব মার্কেটে ডলারের দরের ব্যবধান ছিল ৩-১০ টাকা। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ডলারের বাজার ক্রমেই স্থিতিশীল হয়ে এসেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধান শ্রমবাজারগুলোয় হুন্ডির যে বাজার আছে, সেটির চাহিদা তৈরি হয় বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ বাজারে হুন্ডির চাহিদায় বড় পতন হয়েছে। হুন্ডির বাজারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালানের যোগসূত্র আছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটেও চিড় ধরেছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শক্ত অবস্থানের কারণে সীমান্ত দিয়ে স্বর্ণ চোরাচালান কমেছে। এ কারণে কার্ব মার্কেটে ডলারের চাহিদায় পতন হয়েছে। আমদানির ঋণপত্র (এলসি) কমে যাওয়ার প্রভাবে ব্যাংকেও ডলারের চাহিদা কমে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত মে মাসে দেশের আমদানি ছিল ৫১৮ কোটি ডলার। একই মাসে ৩৬৭ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। আর রেমিট্যান্স হিসেবে দেশে এসেছে ২২৫ কোটি ডলার। অর্থাৎ ওই মাসে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয়ের চেয়ে আয় বেশি ছিল। এ ধারাবাহিকতা বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে। আগস্টে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৩৯ শতাংশ। গত মাসে প্রবাসীরা ২২২ কোটি ১৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, রফতানি খাত স্থিতিশীল থাকার পাশাপাশি রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে দেশে ডলারের দর আপাতত বাড়ার সম্ভাবনা নেই। বরং ক্রলিং পেগের ব্যান্ড কমানো হলে ব্যাংকে ডলারের দরও কমে আসবে। এর প্রভাবে কার্ব মার্কেটে ডলারের দর আরো কমবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে একজন ব্যাংকার বলেন, ‘ব্যাংক খাতে ডলারের চাহিদা কমে গেছে। এলসি খোলার তেমন কোনো তোড়জোড় নেই। ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গতিপ্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করছেন। নতুন বিনিয়োগ না থাকলে মূলধনি যন্ত্রপাতির চাহিদা থাকে না। আগামী এক-দুই মাস পর ডলারের প্রকৃত চাহিদা বোঝা যাবে। জোগান স্বাভাবিক থাকলে ডলারের দর আপাতত বাড়ার সম্ভাবনা নেই।’

‘হুন্ডির বাজারে ডলারের চাহিদা এখন খুবই কম। এ কারণে কার্ব মার্কেটে ডলারের দর পড়ে গেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রবাসীরা ব্যাংকে রেমিট্যান্স পাঠালেই বেশি টাকা পাচ্ছেন। প্রণোদনাসহ যোগ করলে রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে প্রতি ডলার ১২৩ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। যেখানে কার্ব মার্কেটে ডলার মিলছে ১২১ টাকায়।’

গভর্নর পদে দায়িত্ব গ্রহণের পর আহসান এইচ মনসুর ঘোষণা করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে আর ডলার বিক্রি করা হবে না। ব্যাংকগুলোকে নিজেদের আমদানির দায় মেটানোর ডলার নিজেরাই সংগ্রহ করতে হবে। এ ঘোষণার পর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এতে রিজার্ভের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩১ জুলাই আন্তর্জাতিক মানদণ্ড (বিপিএম৬) অনুযায়ী দেশের রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। ২৮ আগস্ট রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে ২০ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। যদিও গত জুলাইয়ে রিজার্ভ থেকে ১৩০ কোটি বা ১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার ক্ষয় হয়েছিল।

Author

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আপনি এটাও পড়তে পারেন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

শেয়ার বাজার

আপনি এই পৃষ্ঠার কন্টেন্ট কপি করতে পারবেন না।