ঢাকা শেয়ার বাজার

৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বুধবার ২২ মাঘ ১৪৩১

মার্চেন্ট ব্যাংকের ডিসক্রিশনারি প্রোডাক্ট হতে পারে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের অন্যতম বিকল্প

সবার আগে শেয়ার বাজারের নির্ভর যোগ্য খবর পেতে আপনার ফেসবুক থেকে  “ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম” ফেসবুক পেজে লাইক করে রাখুন, সবার আগে আপনার ওয়ালে দেখতে। লাইক করতে লিংকে ক্লিক করুন  facebook.com/dhakasharebazar2024

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হিসাবসমূহ ডিসক্রিশনারি এবং নন-ডিসক্রিশনারি দুইভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। নন-ডিসক্রিশনারি বিনিয়োগ হিসাবসমূহে বিনিয়োগকারীগণ সাধারণত নিজস্ব সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করে লেনদেন করে থাকেন।

অপরদিকে ডিসক্রিশনারি বিনিয়োগ হিসাবসমূহ মার্চেন্ট ব্যাংকের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তাগণ বিনিয়োগকারীদের পক্ষে পরিচালনা করে থাকেন। ডিসক্রিশনারি বিনিয়োগ হিসাবসমূহ মার্চেন্ট ব্যাংকের অন্যতম একটি প্রোডাক্ট হলেও বাংলাদেশে এর প্রচলন এখনো জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। অন্যভাবে বলা যায়, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার স্থিতিশীল না হওয়ায় মার্চেন্ট ব্যাংকসমূহের এই প্রোডাক্টের বিষয়ে আগ্রহ কম পরিলক্ষিত হয়।

ডিসক্রিশনারি বিনিয়োগ হিসাবসমূহের ক্ষেত্রে সাধারণত বিনিয়োগকারীগণ একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সংশ্লিষ্ট মার্চেন্ট ব্যাংকের বিনিয়োগ হিসাবে জমা করেন। এটা মাসিক/ত্রৈমাসিক/ষান্মাষিক/বাৎসরিক কিংবা এককালীন ভিত্তিতে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য হতে পারে। মার্চেন্ট ব্যাংকসমূহ এ ধরনের প্রোডাক্টের জন্য একটি নির্দিষ্ট ফি নিয়ে থাকে।

মার্চেন্ট ব্যাংকের অভিজ্ঞ ও দক্ষ জনবল দ্বারা দীর্ঘমেয়াদে নিয়মিত ক্যাশ ফ্লো এর মাধ্যমে এই হিসাবসমূহ পরিচালিত হওয়ায় মুনাফার একধরনের নিশ্চয়তা আশা করা যায়। নিয়মিত জমার বাধ্যবাধকতা থাকায় বিনিয়োগকারীগণ সঞ্চয়ে আগ্রহী হন।

এছাড়া ডিজিটাল পদ্ধতিতে অর্থ জমা ও নিয়মিত রিপোর্ট পাওয়া যাওয়ায় বিষয়টি আরও সহজ হয়েছে। যারা কর্মব্যস্ততার কারণে নিয়মিত পুঁজিবাজারের হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করে বিনিয়োগ করতে পারেন না, তাদের জন্য এটি হতে পারে অন্যতম বিনিয়োগের সুযোগ।

পুঁজিবাজারে ডিসক্রিশনারি প্রোডাক্ট নিয়ে অন্যান্য মার্চেন্ট ব্যাংকের পাশাপাশি ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-এর সাবসিডিয়ারি কোম্পানি রাস্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড ২০১৩ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি এই সেবাকে Term Investment Plan (TIP) নামে ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠান ও কর্পোরেশনসমূহকে টার্গেট করে বিশেষ কয়েকটি শ্রেণিতে বিভক্ত করে বাজারজাতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

বর্তমানে তারা ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠানের জন্য সাধারণ, প্রবাসীদের জন্য স্বদেশ, নারীদের জন্য সঞ্চিতা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য সংকল্প নামে বিশেষ ধরনের চারটি TIP চালু করেছে। এই প্রোডাক্টকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিধি প্রেরণ করছেন এবং আগ্রহীদের নিয়ে নিয়মিত কর্মশালার আয়োজন করছেন।

বৃহৎ জনগোষ্ঠীর দেশ হিসেবে দেশি ও অনিবাসী বাংলাদেশীদের সঞ্চয়কে সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগের প্রধান ক্ষেত্র হিসেবে সমাদৃত পুঁজিবাজার যা, বিনিয়োগকারীরা বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবেও বিবেচিত। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীগণ দেশের অর্থনীতি বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

বিনিয়োগের ক্ষেত্র সম্প্রসারণ, মার্চেন্ট ব্যাংকিং সেবাকে গণমুখীকরণ, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবণতা সৃষ্টিসহ ক্ষুদ্র আয়ের মানুষকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে উদবুদ্ধকরণের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হলে পুঁজিবাজারে ডিসক্রিশনারি প্রোডাক্ট নিয়ে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এবং জনগণের দোরগোড়ায় এ সেবাকে পৌঁছে দিতে হবে।

শুধু আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নয় দেশের সকল মার্চেন্ট ব্যাংককে এই সেবা নিয়ে কাজ করতে হবে। এর ফলে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মধ্যে গ্রাহক সেবার প্রতিযোগিতা হবে, যা এই সেক্টরের মান উন্নয়নে যথেস্ট ভূমিকা রাখবে। দেশের পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক বিশ্লেষকদের কাজের পরিধি বাড়বে এবং নিয়মিত পুঁজিবাজার বিশ্লেষণের কারণে বাজারের উৎকর্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং নতুন নতুন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগ ক্ষেত্র সৃস্টি হবে।

নিয়মিত ক্যাশ ফ্লো এর কারণে পুঁজিবাজার ফিরে পাবে স্থিতিশীলতা এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ বাড়বে। সর্বোপরি, যারা বর্তমানে এই প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছেন, তাদের সফলতার উপর নির্ভর করছে এই প্রোডাক্টের ভবিষ্যৎ।

Author

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আপনি এটাও পড়তে পারেন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

শেয়ার বাজার

আপনি এই পৃষ্ঠার কন্টেন্ট কপি করতে পারবেন না।