দেশের ব্যাংক ও শেয়ারবাজারের অবস্থা আগের থেকে উন্নত হচ্ছে। তবে শেয়ারবাজারে সূচক কমলেই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানকে সরাতে হবে-এমন দাবি করা একেবারে ঠিক না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
আজ শনিবার (২১ ডিসেম্বর) ব্যাংকিং অ্যালামনাকের ৬ষ্ঠ সংস্করণের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেছেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমাদের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের মতো শেয়ারবাজারের অবস্থাও একই রকমের। শেয়ারবাজারের শেয়ার প্রাইস কমে যাচ্ছে বলেই ‘চেয়ারম্যানকে রিমুভ কর’ বলে মিছিল হচ্ছে। আপনারা জেড ক্যাটাগরির শেয়ার কিনছেন, যার কোনো অস্তিত্ব নেই। অথচ এ শেয়ার মহা আনন্দে কিনছেন। ন্যূনতম কোনো মূল্য নেই, এগুলো কয়েক দিন পরই ওয়েস্ট পেপার হিসেবে ব্যবহার হবে। এজন্য একটু কষ্ট করতে হবে। আমি বিনিয়োগকারীদের দায় দিচ্ছি না। শেয়ারবাজারের প্লেয়ার ও রেগুলেটরদের অনেক দায় রয়েছে।
ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সঠিক তথ্য-উপাত্ত দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে আমাদের দেশে ব্যাপক তথ্য বিভ্রাটের কারণে বিভ্রান্ত হতে হয়। তথ্য বিভ্রাটের ক্ষেত্রে নীতি নির্ধারকদের নেতিবাচক ভূমিকা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তথ্যের গুণগত মান ঠিক রাখতে হবে। ব্যাংকিং অ্যালামনাইয়ের মতো শেয়ারবাজারের জন্যও একটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট কিছু বের করতে পারলে ভালো হতো।
এছাড়াও তিনি বলেন, একটি ন্যাশনাল সিঙ্গেল উনডো করা যেতে পারে। এর ফলে ব্যবসায়ীরা এক স্থান থেকে সব তথ্য পাবে। তাহলে ব্যবসায়ীদের ১০ জাযগায় দৌড়াতে হবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ সচিব ড. খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, আর্থিকখাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগিতা চাই। যাতে বিশৃঙ্খলা না হয়৷ আমরা ইত্যোমধ্যে বিভিন্ন বোর্ডে পরিবর্ত এনেছি।
সভাপতিত্বের বক্তব্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হুসাইন জিল্লুর রহমান বলেন, তথ্যের জোগান দেয়া জরুরি৷ অর্থনীতিতে পাঁচটি বড় চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, এর মধ্যে দুটি হচ্ছে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফেরানো ও সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোর কাজ চলছে। সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতাও সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। অন্য তিন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা এবং বিশেষ সুবিধাভোগী ব্যবসায়িক শ্রেণির (অলিগার্ক) প্রভাব কমানো। যথাযথ পদক্ষেপ নিলে এগুলোর ক্ষেত্রেও ২০২৫ সালের মধ্যে ইতিবাচক কিছু দেখা যাবে।
হোসেন জিল্লুর বলেন, এখন অর্থনীতির চাকা ঘোরানো বা বেগবান করা দরকার। অবশ্য এ কাজ শুধু অর্থ মন্ত্রণালয়ের নয়, অন্যদেরও সমান দায়িত্ব আছে। বিনিয়োগ থমকে আছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নসহ অনেক কিছু করার আছে। কীভাবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায় (এসএমই) থেকে তৃণমূল পর্যায়ে আস্থার জায়গা তৈরি করা যায় এবং মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে পরিবারগুলোকে রক্ষা করা যায়, সেটি গুরুত্বপূর্ণ।
তবে অলিগার্কদের বাজার নিয়ন্ত্রণের শক্তি কমানোর ক্ষেত্রে দৃশ্যমান কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন হোসেন জিল্লুর।
Author
-
'ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম' একটি নির্ভরযোগ্য শেয়ার বাজার ভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল। অর্থ ও বাণিজ্য, রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি, প্রতিবেদন, বিশ্লেষণমূলক লেখা প্রকাশ করে।
View all posts
'ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম' শেয়ার মার্কেটের প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সততার সহিত পরিবেশন করে এবং কোন সময় অতিরঞ্জিত, ভুল তথ্য প্রকাশ করেনা এবং গুজব ছড়ায়না, বরং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে বদ্ধ পরিকর। এটি একটি স্বাধীন, নির্দলীয় এবং অলাভজনক প্রকাশনা মাধ্যম।