ঢাকা শেয়ার বাজার

১ নভেম্বর ২০২৫ শনিবার ১৬ কার্তিক ১৪৩২

আমরা কি খাব? আর কি খাব না (৭ম পর্ব)

সবার আগে শেয়ার বাজারের নির্ভর যোগ্য খবর পেতে আপনার ফেসবুক থেকে  “ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম” ফেসবুক পেজে লাইক করে রাখুন, সবার আগে আপনার ওয়ালে দেখতে। লাইক করতে লিংকে ক্লিক করুন  facebook.com/dhakasharebazar2024

আমরা কি খাব? আর কি খাব না (৭ম পর্ব)
কার্বোহাইড্রেট কি  ?
কার্বোহাইড্রেট এর একমাত্র কাজ হচ্ছে শক্তি উৎপাদন করা এবং শরীর গঠনে এর কোন কাজ নেই। মনে করুন প্রোটিন, ফ্যাট, মিনারেল ও পানি ইঞ্জিন এর যন্ত্রপাতি গঠন করে, আর কার্বোহাইড্রেট হচ্ছে জ্বালানি বা ফুয়েল। অবশ্য ফ্যাটও ফুয়েল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
কার্বোহাইড্রেট প্রধানত ৩ প্রকার ঃ
(১) সুগারঃ
 সবচেয়ে সরল কার্বোহাইড্রেট। যেমন – ফ্রুক্টোজ (কর্ন সিরাপ), সুক্রোজ (চিনি), ল্যাকটোজ (দুধে থাকে)।
(২) স্টার্চঃ 
কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট। যেমন – শস্যদানা (ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদি), আলু, কচু, বিন, ডাল ইত্যাদিতে থাকে।
(৩) ফাইবারঃ
এটাও কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট। যেমন – শাকসবজী, ফলমূল, বাদাম ইত্যাদিতে থাকে।
আমরা কার্ব জাতীয় যে খাবারই খাই না কেন, পরিপাক হয়ে সরল উপাদান গ্লুকোজ কিম্বা ফ্রুক্টোজ হিসেবে শোষিত হয়।
ভাল কার্বোহাইড্রেট, খারাপ কার্বোহাইড্রেটঃ
সরল কার্বযুক্ত খাবার খুব দ্রুত পরিপাক হয়ে ব্লাডে চলে যায়, অর্থাৎ এগুলোর Glycemic Index হাই। তাই এসব কার্ব পরিহার করা উচিত। যেমন – চিনি, কর্ন সিরাপ, ফলের জুস, সফট ড্রিংকস, ক্যান্ডি, ডেজার্ট ইত্যাদি। স্টার্চযুক্ত খাদ্য অতি সীমিত করা উচিত কিংবা পরিহার করা উচিত। যেমন – শস্যবীজ বা গ্রেইন (ধান, গম, ভুট্টা, জোয়ার), গোল আলু, কচু ইত্যাদি।
স্টার্চ যুক্ত খাদ্যের সমস্যা নিয়ে পরে বিস্তারিত লেখা হবে। রিফাইন গ্রেইন (শস্য) ও চিনি দিয়ে তৈরি করা হয় সকল প্রকার প্রসেসড ফুড, ফাস্ট ফুড – যা এক কথায় পরিত্যাজ্য।
ভাল কার্বোহাইড্রেট হচ্ছে ফাইবারযুক্ত কমপ্লেক্স কার্ব। যেমন – শাকসবজী ও ফলমূল। শাকসবজী ও ফলমূল খেলে আপনি একইসাথে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার এবং উন্নত মানের কার্বোহাইড্রেট পাবেন। এসব খাবারের Glycemic index কম।
কার্বোহাইড্রেট এর প্রয়োজনীয়তাঃ
কার্ব  শক্তির অন্যতম উৎস। আমাদের দেহের অধিকাংশ সেল শক্তি (ATP) উৎপাদনের জন্য ফুয়েল হিসেবে গ্লুকোজ ও ফ্যাট ব্যবহার করতে সক্ষম। কিন্তু ব্রেইনের এক-তৃতীয়াংশ কোষ শক্তির উৎস হিসাবে গ্লুকোজ ব্যবহার করে। তাই আপনি যদি সম্পূর্ণ ভাবে কার্বোহাইড্রেট পরিহার করেন তবে বডি মাংসপেশী (এমিনো এসিড) ভেঙ্গে ব্রেইনের জন্য অত্যাবশকীয় গ্লুকোজ উৎপাদন করে (গ্লুকোজেনেসিস)। শরীরের মহামূল্যবান মাসল ভাঙ্গা কারও জন্য কাম্য না।
দেহের প্রয়োজনের অতিরিক্ত গ্লুকোজ লিভার ও মাসল এ গ্লাইকোজেন হিসেবে জমা থাকে। লিভারে প্রায় ১০০ গ্রাম গ্লাইকোজেন জমা থাকে যা হতে ১ দিন শক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত গ্লুকোজ ট্রাইগ্লিসারাইড (টিজি) তে রূপান্তরিত হয়ে লিভার ও দেহের বিভিন্ন অর্গান ও অংশে ফ্যাট হিসেবে জমা হয় – যা অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই কার্ব জাতীয় খাবার খেতে এর পরিমাণ বিষয়ে সবসময় সচেতন থাকতে হবে।
আমরা কি পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট খাবো?
আপনি কতটা কার্বোহাইড্রেট খাবেন, তা নির্ভর করে আপনার কায়িকশ্রমের পরিমাণ ও বডি কন্ডিশনের উপর। বডি ইঞ্জিন যত বেশি চলবে, তার ফুয়েল (কার্ব) তত বেশি লাগবে। কিন্তু আপনি যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত কার্ব গ্রহণ করেন, তবে তা চর্বি বা মেদ হিসেবে জমা হতে থাকবে – যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দৈনিক গৃহীত ক্যালরির ২০-৪০% শর্করা থেকে আসা উচিত। কিন্তু সম্ভবত বাঙালীরা দৈনিক ৭০-৮০% ক্যালরি শর্করা থেকে গ্রহণ করে।
কার্বোহাইড্রেট এর উৎসঃ
(ক) ভাল কার্বোহাইড্রেট
শাকসবজী – পালংশাক, ব্রুকলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি ও সকল ধরনের শাক।
মূল ও স্টার্চি সবজি- গাজর, মিষ্টি আলু, বিট, মিষ্টি কুমড়া, স্কোশ।
ফলমূল – কলা, পেঁপে, আনারস, কমলা, মালটা, জাম্বুরা, আপেল, স্ট্রবেরি ইত্যাদি।
বাদাম – সকল প্রকার বাদাম।
সিডস – সূর্যমুখী বীজ, পামকিন সীড।
(খ) নিম্নমানের কার্বোহাইড্রেট
শস্য বা গ্রেইন – ভাত, গম, ভুট্টা, বার্লি, যব ইত্যাদি।
ডেইরী ফুড (বড়দের জন্য)
(গ) নিকৃষ্ট কার্বোহাইড্রেট
চিনি, সফট ড্রিংকস, জুস, প্রসেসড ফুড (বিস্কুট, কেক, নুডলস, পাউরুটি, কোকিজ, ডোনাট, চিপস, ক্যান্ডি ইত্যাদি), ফাস্ট ফুড (বার্গার, ফ্রেন্স ফ্রাই, পিৎজা, স্যান্ডউইচ) ইত্যাদি।
সারকথাঃ
প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন ও মিনারেল এর মত দেহের জন্য অত্যাবশকীয় বা essential কার্বোহাইড্রেট নাই। কার্বোহাইড্রেট এর একমাত্র কাজ হচ্ছে প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান দেয়া। শাকসবজী ও ফলমূল সর্বোত্তম কার্বোহাইড্রেট। কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার পরিমাণ নির্ভর করে – কায়িক শ্রম, বডি কন্ডিশন, ফ্যাট গ্রহণের পরিমাণ ও ডায়েট স্টাইলের উপর। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করলে তা মেদ বা চর্বি আকারে দেহে সঞ্চিত হয় – যা ভয়ানক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
চলবে………

লিখেছেন
Engr. Shafiqul Islam

Author

  • 'ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম' একটি নির্ভরযোগ্য শেয়ার বাজার ভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল। অর্থ ও বাণিজ্য, রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি, প্রতিবেদন, বিশ্লেষণমূলক লেখা প্রকাশ করে।

    'ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম' শেয়ার মার্কেটের প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সততার সহিত পরিবেশন করে এবং কোন সময় অতিরঞ্জিত, ভুল তথ্য প্রকাশ করেনা এবং গুজব ছড়ায়না, বরং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে বদ্ধ পরিকর। এটি একটি স্বাধীন, নির্দলীয় এবং অলাভজনক প্রকাশনা মাধ্যম।

    View all posts
Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আপনি এটাও পড়তে পারেন
শেয়ার বাজার

আপনি এই পৃষ্ঠার কন্টেন্ট কপি করতে পারবেন না।