শেষ হবার পথে জুন ক্লোজিং শেয়ারের লভ্যাংশ ঘোষণা, চলছে ডিসেম্বর ক্লোজিং শেয়ারের লভ্যাংশ ঘোষণার মৌসুম। নগদ লভ্যাংশ নিয়ে অনেক বিনিয়োগকারী অনেক বিষয় জানেন না। নগদ লভ্যাংশ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের না জানা অনেক প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আজকের আয়োজন।
নগদ লভ্যাংশ বন্টন
নগদ লভ্যাংশ বন্টন হয় শেয়ারের ফেস ভ্যালু ১০ টাকা হিসাবে। অনেকেই এই বিষয় টি জানেন না, অনেকেই মনে করেন শেয়ারের বর্তমান বাজার দরের উপরেই বুঝি নগদ লভ্যাংশ দেয়। কয়েক দিন আগে একজন শেয়ার বিনিয়োগকারী ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কমের ফোন নাম্বারে ফোন দিয়ে অভিযোগ দিল, তিনি গত ২০২৩ সালে একটি কোম্পানির নগদ লভ্যাংশ নিয়েছিল ৫৫০ শতাংশ লভ্যাংশ দেখে। কিন্তু তাকে প্রতি শেয়ারে মাত্র ৫৫ টাকা দিয়েছিল। তার অভিযোগ কেন কোম্পানি তাকে বাকি লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত করলো।
উল্লেখ্য, রেকিট বেনকিজার ৫৫০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল। মানে প্রতি শেয়ারে একজন বিনিয়োগকারী ৫৫ টাকাই পাবেন। তাকে বঞ্চিত করা হয়নি, তার প্রাপ্য টাকা তিনি পেয়েছেন। তাকে ফোনে ভালো ভাবে বুঝানোর পরে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন।
আমরা যারা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ/ব্যবসা করি ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় লভ্যাংশ গ্রহন করি। যারা মৌলভিত্তি থেকে বিনিয়োগ করে তাদের মূল টার্গেট থাকে লভ্যাংশ গ্রহণ করা, সেক্ষেত্রে তারা ভালো নগদ লভ্যাংশ দেয় এমন কোম্পানিই বেছে নেন বিনিয়োগের জন্যে।
যে সব কোম্পানি নিয়মিত নগদ লভ্যাংশ প্রদান করে সেইসব কোম্পানির ভিত্তি বেশ মজবুত। নগদ লভ্যাংশ দিলে কোম্পানির রেকর্ড ডেটের পরে দাম অ্যাডজাস্ট হয়না। আবার আর এক পক্ষ আছেন যারা ট্রেডিং করেন, কিন্তু দাম কমে যাবার কারণে শেয়ার বিক্রি করতে না পারায় লভ্যাংশ গ্রহন করতে বাধ্য হন।
আবার গত বছরে বহু শেয়ার ফ্লোর প্রাইজে আটকে থাকার কারণে বাধ্য হয়ে অনেক বিনিয়োগকারীই লভ্যাংশ পেয়েছেন। ফ্লোর প্রাইজে শেয়ার আটকে থাকার কারণে গতবছর ইচ্ছা না থাকা সত্তেও অনেক বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাই অনেক বিনিয়োগকারী এখনো নগদ লভ্যাংশ পাওয়া না পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।
লভ্যাংশ কখন অনুমোদন হয়
সাধারণত এজিএম হবার পরে শেয়ার হোল্ডারদের অনুমোদন সাপেক্ষে লভ্যাংশ অনুমোদন হয়। লভ্যাংশ অনুমোদন হবার পর থেকে কোম্পানি গুলো লভ্যাংশ বিতরণ শুরু করেন। মোটামুটি এজিএমের পরে বেশির ভাগ কোম্পানি এক দেড় মাসের মধ্যে বিএফটিএনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের বিও একাউন্টে লিপিবদ্ধ ব্যাংক একাউন্ট নাম্বারে প্রেরণ করে থাকে। তবে যারা মার্জিন লোন নিয়ে ব্যবসা করেন তাদের নগদ লভ্যাংশের টাকা মার্জিন লোন একাউন্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্টে পাঠানো হয়। তারপর প্রতিষ্ঠান গুলি বিও একাউন্টে লোন এডজাস্ট করে দেন।
লভ্যাংশ না পেলে করণীয়
অনেক সময় অনেক বিও একাউন্টের ব্যাংক হিসাবে লভ্যাংশ যায় না। সেক্ষেত্রে প্রথমেই দেখতে হবে বিওতে দেয়া ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার ঠিক আছে কিনা, সঠিক ভাবে ১৩ সংখ্যার ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার দেয়া আছে কিনা, যদি ঠিক না থাকে তাহলে আপনার আপডেট ব্যাংক চেকের পাতার ফটোকপি আপনার হাউজে দিয়ে সিডিবিএলে আপডেট করিয়ে নিবেন।
তারপরও আপনার সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরে যদি ডিএসইর বা সিএসইর নিউজ বিভাগে নগদ লভ্যাংশ বিতরণ সম্পন্ন করেছে, এমন খবর প্রকাশিত হবার পরেও, যদি কোন বিনিয়োগকারী লভ্যাংশের টাকা না পায়, তাহলে তাদের অবশ্যই সেই কোম্পানির শেয়ার বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে আপনার লভ্যাংশের টাকা নিয়ে আসতে হবে।
আপনি মনে রাখবেন যদি টাকা না আসে কোম্পানি কিন্তু ইচ্ছে করে আপনাকে আবার পাঠাবেনা। তাই নিজের উদ্যোগে নিজের লভ্যাংশ নিয়ে আসতে হবে।
আপনাদের সুবিধার জন্যে একটি কাজ করবেন নোটবুকে লিপিবদ্ধ করে রাখবেন কোন কোম্পানির লভ্যাংশ নিলেন, কোম্পানির রেকর্ড তারিখ, এজিএম এর তারিখ, লভ্যাংশ বন্টন সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করছে কিনা। এভাবে হিসাব রাখলে আপনার লভ্যাংশ পেতে অসুবিধে হবেনা।
2 Responses