ঢাকা শেয়ার বাজার

৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বুধবার ২২ মাঘ ১৪৩১

বেনামে শেয়ার কিনে ব্যাংক দখল ঠেকাতে নতুন নীতিমালা

সবার আগে শেয়ার বাজারের নির্ভর যোগ্য খবর পেতে আপনার ফেসবুক থেকে  “ঢাকা শেয়ার বাজার ডট কম” ফেসবুক পেজে লাইক করে রাখুন, সবার আগে আপনার ওয়ালে দেখতে। লাইক করতে লিংকে ক্লিক করুন  facebook.com/dhakasharebazar2024

গত একযুগে এস আলম গ্রুপ বেনামে শেয়ার কিনে একাধিক ব্যাংক দখল করেছিল । ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঠেকাতে কোনো ব্যাংকে ২ শতাংশের বেশি শেয়ারধারকের প্রকৃত সুবিধাভোগী মালিক বা আলটিমেট বেনিফিশিয়াল ওনার্সের (ইউবিও) ডেটাবেইস করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠানের নামে উল্লেখযোগ্য শেয়ার ধারণ করলে সে বিষয়েও তথ্য দিতে হবে। 

বাংলাদেশ ব্যাংক গত রবিবার(১ ডিসেম্বর)  একটি নতুন নীতিমালা সব ব্যাংকে পাঠিয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি কী পদ্ধতিতে শেয়ারের প্রকৃত সুবিধাভোগী বের করা হবে, তা জানিয়ে দিয়েছে। চিঠিতে ব্যাংকগুলোকে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে এ বিষয়ে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

ব্যাংক কোম্পানি আইনের আলোকে একক ব্যক্তি, পরিবার বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যাংকে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করতে পারে না। তবে বিগত সরকারের সময়ে বেনামি কোম্পানির নামে শেয়ার কিনে ৭টি ব্যাংক দখলে নিয়েছিল এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকগুলো হলো– ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী, ন্যাশনাল, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী, ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। এর বাইরেও বিভিন্ন ব্যক্তি বা পরিবার বিভিন্ন ব্যাংকে বেনামি শেয়ার ধারণ করছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শেল কোম্পানির নামে ধারণ করা শেয়ারের বিপরীতে প্রতিনিধি পরিচালক নিযুক্ত করে পুরো ব্যাংকের কর্তৃত্ব নিজেরা নিয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ব্যাংকের প্রকৃত সুবিধাভোগী কারা, সেই নীতিমালা প্রণয়ন করে। এসব মেনে চলার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে তদারকি না করায় ব্যাংক খাতে বড় আকারে বেনামে শেয়ার ধারণ করে বেনামে ঋণ নেওয়া হয়। ফলে পুরো খাত এখন সংকটে পড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালায় বলা হয়েছে, এখন থেকে যে কোনো উপায়ে ২ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ারধারক ব্যক্তি, পরিবার বা প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত মালিক আলটিমেট বেনিফিশিয়াল ওনার্স হিসেবে বিবেচিত হবে। ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের নামে ২ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ারের সুবিধাভোগীও এই ক্যাটেগরিতে পড়বে। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করে, ঘোষিত শেয়ার ধারণের কাঠামো স্বচ্ছ বা বাস্তবতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় তাহলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ শেয়ারহোল্ডারের উপযুক্ত ডকুমেন্ট উপস্থাপনের নির্দেশ দিতে পারবে। কোনো অসংগতি পেলে আইনগত ব্যবস্থা এবং মালিকানা কাঠামো পরিবর্তনের নির্দেশ দিতে পারবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, শেয়ার ধারকের তথ্য প্রতি প্রান্তিক শেষ হওয়ার পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠাতে হবে। আগামী মার্চ প্রান্তিক থেকে এই তথ্য দিতে হবে। সে আলোকে শেয়ারের প্রকৃত মালিকানার বিষয়ে ‘ইউবিও ডেটাবেইস’ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে একটি প্রান্তিক চলমান অবস্থায় মালিকানা পরিবর্তন হলে তাৎক্ষণিকভাবে সে তথ্য জানাতে হবে। কেউ মিথ্যা তথ্য দিলে ব্যাংক কোম্পানি আইনের আলোকে তার শেয়ার রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নীতিমালা প্রতিটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের আগামী সভায় বিস্তারিত উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, একটি ব্যাংকের মালিকানা কাঠামোর অস্বচ্ছতা ব্যাংকটির প্রকৃত অবস্থা মূল্যায়ন, মূলধনের আসল চিত্র যাচাইয়ের ক্ষেত্রে অন্তরায়। এ ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ কঠিন করে তুলেছে। বেসরকারি খাতের ব্যাংকের আর্থিক সুস্থতা এবং ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতার জন্য যা প্রতিবন্ধক। এ রকম অবস্থায় ব্যাংকের প্রকৃত মালিকানা কাঠামোতে স্বচ্ছতা আনার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। ২ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ারধারকদের একটি ডেটাবেইস করা হবে। এই ডেটাবেইসের তথ্যের সঠিকতা বের করার জন্য বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করা হবে। প্রতিটি ব্যাংকেও শেয়ার বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট ডেটাবেইস রাখতে হবে। আর ডেটাবেইসের তথ্যে সঠিকতার জন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শেয়ার বিভাগের প্রধান এবং কোম্পানি সচিব দায়বদ্ধ থাকবেন। এ-সংক্রান্ত কোনো ভুয়া তথ্য দিলে ব্যাংক কোম্পানি আইনের আলোকে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

 

Author

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আপনি এটাও পড়তে পারেন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

শেয়ার বাজার

আপনি এই পৃষ্ঠার কন্টেন্ট কপি করতে পারবেন না।